গত ১৯ জানুয়ারি মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দশম আসর। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বিপিএলের গ্রুপ পর্ব। দেখতে দেখতে ৩৫তম দিন পার হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৬ ম্যাচের মধ্যে ৪২টি শেষ হয়েছে। চূড়ান্ত হয়ে গেছে প্লে অফের চার দল। সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে তারুণ্যনির্ভর দল দুর্দান্ত ঢাকা। তারা রেকর্ড ১১ ম্যাচে টানা হারের স্বাদ গ্রহণ করে।
আগামী সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দুই দল রংপুর ও কুমিল্লা মুখোমুখি হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। ১২ ম্যাচ শেষে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রংপুর, অন্যদিকে সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে কুমিল্লা। নিয়মানুসারে এ দুই দল আগামী সোমবার মুখোমুখি হবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে। এ ম্যাচের জয়ী দল সরাসরি কাটবে ফাইনালের টিকিট।
তবে ম্যাচটিতে হারলেও যে তাদের ফাইনালে খেলা হবে না এমনটি নয়। বরং তারা ফাইনালে যাওয়ার পথে পাবে আরও একটি সুযোগ। এলিমিনেটর রাউন্ডে জয়ী দলের বিপক্ষে খেলবে তারা। টেবিলের তিনে থাকা ফরচুন বরিশাল ও চতুর্থ স্থানে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মধ্যে ২৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টায় হবে এলিমিনেটর রাউন্ডের ম্যাচ। জয়ী দল প্রথম কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে বাদ পড়া দলের বিপক্ষে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে ২৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে লড়বে। আর পরাজিত দল দশম আসর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নেবে।
আগামী ১ মার্চ প্রথম ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জয়ী দুই দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে। এখান থেকে একটি দলের হাতে শিরোপা উঠার মধ্যদিয়ে পর্দা নামবে বিপিএলের দশম আসরের।
প্লে অফ রাউন্ড শুরুর আগে দেখে নেওয়া যাক ব্যাট ও বল হাতে কারা রয়েছেন শীর্ষ ৫-এ।
ব্যাটিংয়ের শীর্ষ পাঁচে আছেন যারা
ব্যাটিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা পেয়েছেন চার বাংলাদেশি ক্রিকেটার। তারা হলেন- তামিম ইকবাল, তাওহিদ হৃদয়, তানজিদ হাসান ও মুশফিকুর রহিম। একমাত্র বিদেশি হিসেবে আছেন অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স রোস।
ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল গ্রুপ পর্বের ১২ ম্যাচের সবকটি খেলে ১২৬.১২ স্ট্রাইকরেটে ২ হাফসেঞ্চুরিতে করেছেন ৩৯১ রান নিয়ে রয়েছেন রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষস্থানে। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ৭১ রান।
দ্বিতীয় স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের তাওহিদ হৃদয় ১২ ম্যাচে ১৪৯.৬ স্ট্রাইকরেটে ১টি সেঞ্চুরি ও ১টি হাফসেঞ্চুরিতে ৩৮৩ রান নিয়ে রয়েছেন রান সংগ্রাহকের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। তার সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ১০৮ রান।
তৃতীয় স্থানে রয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তানজিদ হাসান তামিম। ১১ ম্যাচে ১৩৬.৪২ স্ট্রাইকরেটে ১টি সেঞ্চুরি ও ২টি হাফসেঞ্চুরিতে ৩৮২ রান করেছেন। তার সর্বোচ্চ ইনিংস ১১৬ রান।
চতুর্থ স্থানটি দখলে রয়েছে দুর্দান্ত ঢাকার বিদেশি রিক্রুট অ্যালেক্স রোস। তিনি ১১ ম্যাচে ১৩৪.৮৬ স্ট্রাইকরেটে ৪টি হাফসেঞ্চুরিতে সংগ্রহ করেছেন ৩৫২ রান।
ফরচুন বরিশালের উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম রয়েছেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকার পঞ্চম স্থানে। তিনি ১২ ম্যাচ খেলে ১২৩.৬২ স্ট্রাইকরেটে ৩টি হাফসেঞ্চুরিতে সংগ্রহ করেছেন ৩১৪ রান। তার সর্বোচ্চ ইনিংস অপরাজিত ৬৮ রান।
বোলিংয়ের শীর্ষ পাঁচে যারা
ব্যাটিংয়ের মতোই বোলিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা পেয়েছেন চার বাংলাদেশি ক্রিকেটার। তারা হলেন— শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ ও সাকিব আল হাসান। একমাত্র বিদেশি হিসেবে আছেন ওমানের বিলাল খান।
আসর থেকে সবার আগে বিদায় নেয় দুর্দান্ত ঢাকার বাঁহাতি পেসার ও এবারের আসরে এখন পর্যন্ত প্রথম হ্যাটট্রিকম্যান শরিফুল ইসলাম রয়েছেন টেবিলের শীর্ষে। তিনি ১২ ম্যাচ থেকে ১৫.৮৬ গড়ে ২২ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ২৪ রানে ৪ উইকেট।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের সাকিব আল হাসান। তিনি ১১ ম্যাচ থেকে ১৫.৫২ গড়ে ১৭ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ১৬ রানে ৩ উইকেট।
তৃতীয় স্থানে রয়েছেন রংপুর রাইডার্সের মাহেদি হাসান। তিনি ১২ ম্যাচ থেকে ১৬.৯৩ গড়ে ১৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ১১ রানে ৩ উইকেট।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিদেশি রিক্রুট ওমানের বোলার বিলাল খান রয়েছেন চতুর্থ স্থানে। তিনি ১২ ম্যাচ থেকে ২৫.৭৮ গড়ে ১৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তার সেরা বোলিং ২৪ চারে ৩ উইকেট।
পঞ্চম স্থান দখল করেছেন রংপুর রাইডার্সের তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ। তিনি ১২ ম্যাচে ২৪.৭৬ গড়ে তুলে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। তার সেরা বোলিং ২৯ রানে ৩ উইকেট।