একটি বাউন্সার সাকিব আল হাসানের হেলমেটে লাগানোর পরই যেন উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন আসিথা ফার্নান্ডো। ঠিক নিজের পরের ওভারে লঙ্কান পেসার বাউন্সার দিয়েই ঘায়েল করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। ব্যক্তিগত ২৫ রানে সাজঘরে ফেরেন সাকিব।
দেখেশুনে খেলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। ফার্নান্ডোকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। টেস্টে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি।
এর আগে তামিম ইকবালও সেঞ্চুরি করেন। একই টেস্টে মুশফিক-তামিমের সেঞ্চুরি করার ঘটনা এবারই প্রথম।
৬ উইকেটে ৪৩৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের চা-বিরতিতে গেছে বাংলাদেশ। মুশফিক ১০৪ রানে অপরাজিত আছেন। নাঈম হাসান সঙ্গে ৪ রানে। বাংলাদেশের লিড ৩৯ রানের।
কাছে এসে সেঞ্চুরি মিস করেছেন লিটন দাস। মধ্যাহ্ন বিরতির পর কাসুন রাজিথার প্রথম বলেই শরীরের বাইরে খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হন তিনি। ১৮৯ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ৮৮ রান করে সাজঘরের পথ ধরলেন উইকেটরক্ষক এই ব্যাটার।
এরপর ক্রিজে আসেন আগের দিন ১৩৩ রানে আহত অবসরে যাওয়া তামিম ইকবাল। সুযোগ ছিল তারও ইনিংসটা বড় করার। কিন্তু রাজিথার পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান তামিম। টানা দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ১২ ওভারের মতো কাটিয়ে ৩৬ রান যোগ করেন সাকিব-মুশফিক।
সাকিব স্বাচ্ছন্দ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। ইনিংসের ১৪৫তম ওভারে আসিথা ফার্নান্ডোর একটি বাউন্সার আঘাত করে তার হেলমেটে। ফার্নান্ডোর পরের ওভারেই আউট হয়ে যান সাকিব।
ফার্নান্ডোর আরেকটি বাউন্সার কাঁধ সমান উচ্চতায় উঠলে ব্যাট চালিয়ে দেন সাকিব (২৫)। লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বলে ক্যাচটি গ্লাভসবন্দী করেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ডিকভেলা।
এর আগে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতে বেশি সময় নেননি মুশফিকুর রহিম। দিনের ১৬তম ওভারেই দেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে করে ফেলেছেন টেস্ট ক্রিকেটে ৫ হাজার রান।
আগেরদিন করা ৩ উইকেটে ৩১৮ রান নিয়ে আজকের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে ২৭ ওভার খেলে অবিচ্ছিন্ন থেকেই মুশফিক-লিটন যোগ করেছেন ৬৭ রান। এ দুজনের চতুর্থ উইকেট জুটির সংগ্রহ ১৬৫ রান। যা টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ।
পাঁচ হাজারি ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে মুশফিক আজ দিনের শুরুতে খানিক সময় নেন। অন্য প্রান্তে লিটন ছিলেন সাবলীল। দিনের দ্বিতীয় বলে তার ব্যাট থেকে আসে প্রথম চার। মুশফিককে প্রথম বাউন্ডারির জন্য সপ্তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। নিয়ন্ত্রিত সুইপে চার মেরে মাইলফলকের কাছাকাছি পৌঁছান তিনি।
পরে কাসুন রাজিথার করা দিনের ১৬তম ও ইনিংসের ১২৩তম ওভারে ফাইন লেগ থেকে দুই রান নিয়ে মুশফিক প্রবেশ করেন পাঁচ হাজারি ক্লাবে। যা করতে তার লাগলো ৮১ টেস্টের ১৪৯ ইনিংস। বিশ্বের ৯৯তম ব্যাটার হিসেবে মুশফিক এই ফরম্যাটে পাঁচ হাজার রান করলেন।
মাইলফলক ছোঁয়ার পরেও হাত খুলে খেলার চেষ্টা দেখা যায়নি মুশফিকের মধ্যে, লিটনও খেলতে থাকেন দেখেশুনে। যে কারণে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ওভারপ্রতি আড়াই রানের বেশি করতে পারেনি।