গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই একের পর এক দেশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমনকি দেশটির বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আইসিসিতে গণহত্যা মামলাও দায়ের হয়েছে। এত কিছুর পরও ইসরায়েলকে অন্ধের মতো সহায়তা দিয়ে আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। তবে বিগত কয়েত মাসে রাফায় ইসরায়েলি স্থল হামলা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে ইসরায়েলের। এমন পরিস্থিতি গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের সময় ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। যুদ্ধ শুরুর পর এবারই প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের এত কঠোর সমালোচনা করল তেল আবিবের প্রধার মিত্র আমেরিকা।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল শুক্রবার ৪৬ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। সেই প্রতিবেদনেই যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অস্ত্রে গাজায় ইসরায়েল মানবিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে উঠে এসেছে।
তবে এত বড় অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা বললেও সুনির্দিষ্ট মূল্যায়ন দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে ওয়াশিংটন। গাজায় কোন কোন এলাকায় এসব অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ইসরায়েল মানবিক আইন লঙ্ঘনের করেছে সে সম্পর্কে সুর্নিদিষ্ট কোনো উদাহরণের কথা সামনে আনেনি যুক্তরাষ্ট্র।
এরপরও রাফায় হামলা ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যকার সম্পর্কে যে ফাটল ধরেছে তা মার্কিন এই প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে আরও প্রকট হয়েছে। ইতিমধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীকে রাফা অভিযান থেকে বিরত রাখতে অস্ত্রের একটি চালান বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া নিষেধ সত্ত্বেও রাফায় অভিযানে গেলে সামনের দিনে তেল আবিবকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে বাইডেন প্রশাসন।
রাফা হলো মিসর সীমান্তে অবস্থিত গাজার সর্বদক্ষিণের শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। এতো মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করলেও বার বার রাফায় স্থল অভিযানের হুমকি দিয়ে আসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলের দাবি, এই শহরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের ছয়টি যুদ্ধ ব্যাটালিয়নের মধ্যে চারটির ঘাঁটি রয়েছে। পরবর্তীতে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে আরও হামাস যোদ্ধা তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। ফলে তারা আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। হামাসের এসব ঘাঁটি নির্মূল না করা পর্যন্ত ইসরায়েলের চূড়ান্ত বিজয় নিশ্চিত হবে না বলেও মনে করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। তবে ব্যাপক প্রাণহানির শঙ্কায় ইসরায়েলি এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এই বিরোধিতায় পশ্চিমা আরও বিভিন্ন দেশ যোগ দিয়েছে।