এই প্রথম বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার বেল্টে অংশ নিচ্ছেন রাজশাহীর উৎসব আহমেদ। মাত্র ২০ বছর বয়সে দেশের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণিতে বক্সিংয়ে অন্যতম গৌরব অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেলে চ্যাম্পিয়ন্সশীপে অংশ নিচ্ছেন উৎসব। এর আগে কখনো এই টাইটেলে বাংলাদেশি কোনো খেলোয়াড় অংশ নেয়নি। আগামী ২৫ মে এই খেলাটি অুনষ্ঠিত হবে ঢাকার ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে। বেক্সিমকো এক্সেল বক্সিং চ্যাম্পিয়ন্সশীপে (একবিসি) গেমসে ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেলে চ্যাম্পিয়ন্সশীপে অংশ নিবে উৎসবের সঙ্গে ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় খেলোয়াড় মাজাহার হোসেন।
উৎসবের পারিবারিক সূত্র মতে, মাত্র ৭ বছর বয়সে বক্সিংয় খেলায় অংশ নেন রাজশাহীর শিরোইল কলোনী এলাকার আশা খাতুনের ছেলে উৎসব আহমেদের। মামা সাফ গেমসে চ্যাম্পিয়ন্স জুয়েল আহমেদ জনির অনুপ্রেরণায় আরও আগ থেকেই বক্সিংয়ে হাতেখড়ি হয় উৎসবের। মূলত মামা দেখেই উৎসব বক্সিংয়ে মনোযোগী হয়ে উঠতে শুরু করেন। এখন সেই মামাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মিশনে নামছেন তিনি। এমনকি আগামী ২৫ মে ভারতীয় খেলোয়াড় মাজাহার হোসেনকে হারাতে পারলে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বক্সিংয়ে ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেলে চ্যাম্পিয়ন্সশীপ অর্জন করবেন উৎসব। যা হবে বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সাফল্য। এর আগে এত বড় টাইটেল কোনো বাংলাদেশী কোনো খেলোয়াড় অর্জন করতে পারেনি। এমনকি এই টাইটেল দেশে বা দেশের বাইরে কোনো খেলোয়াড় অংশই নেননি বলেও জানান বাংলাদেশ জাতীয় বক্সিং দলের কোচ শফিউল আজম মাসুম।
তিনি বলেন, ‘আমরা উৎসবকে প্রস্তুত করছি সর্বাত্মকভাবে। আশা করছি সে দেশের হয়ে প্রথম ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেলে চ্যাম্পিয়ন্সশীপ অর্জন করবে। আমরা দৃঢ় আশাবাদি উৎসব এটি অর্জন করতে পারবে। তার মধ্যে সেই প্রতিভা আছে।’
উৎসব জানান, তিনি ২০২২ সাল থেকে প্রফেশনাল ম্যাচে অংশ নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৮টি ম্যাচের সবকটিতেই তিনি জয়ী হয়েছেন। আগামী ২৫ মে হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে যে গেমসটি অনুষ্ঠিত হবে, সেটিতে তিনি চ্যাম্পিয়ন্স হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
উৎসব বলেন, ‘আমার আশা আমি দেশের হয়ে বক্সিংয়ে অলিম্পিক স্বর্ন জয় করবো। আমি সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। এর জন্য দেশবাসীর সহযোগিতা এবং দোয়া প্রয়োজন। আমার কোচ আমাকে আমাকে সেইভাবেই গড়ে তুলছেন। আমিও প্রচুর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। তবে আর্থিক সঙ্কটে অনেক সময় ইচ্ছে থাকলেও সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি না।’
উৎসবের মা আশা খাতুন বলেন, ‘আমি সামান্য বেতনের একটি প্রকল্পতে চাকরি। কিন্তু ছেলেকে দেশের অন্যতম বক্সার হিসেবে দেখতে চাই। সে কারণে অভাব-অনটনের মধ্যেও ছেলের খরচ জোগাতে আমি সাধ্যমত চেষ্টা করি। আমার স্বপ্ন উৎসব দেশের হয়ে সর্বোচ্চ সম্মান বয়ে আনুক।’
এদিকে আয়োজকদের সূত্র মতে, আগামী ২৫ মে হোটেল কন্টিনেন্টালে ৯টি ইভেন্টে (বাউটে) বাংলাদেশ, চীন, ভারত নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অন্তত ১৮ জন খেলোয়ার অংশ নিবেন বিভিন্ন ওজন শ্রেণিতে। বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ গেমসটি অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে গেমসটি সফল করতে নানা আয়োজন শুরু করেছে বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশন।