১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:৩৬:০৭ পূর্বাহ্ন
পুলিশ নেই ঢাকার বেশিরভাগ থানায়, দেশের বহু থানায় ভাঙচুর, কর্মবিরতি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৮-২০২৪
পুলিশ নেই ঢাকার বেশিরভাগ থানায়, দেশের বহু থানায় ভাঙচুর, কর্মবিরতি

সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরুর পর গেলো দুইদিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক থানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলায় বিক্ষোভকারীদের হাতে থানা জ্বালিয়ে দেয়া থেকে শুরু করে, ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এসবের প্রতিবাদে ও নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতী শুরু করেছেন পুলিশ সদস্যরা। মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানায় পুলিশের অধস্তন কর্মচারীদের এই সংগঠনটি।


বিজ্ঞপ্তির শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে দেশ থেকে স্বৈরাচার উৎখাতের জন্য অভিনন্দন জানানো হয় বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে। পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত প্রতিটি ছাত্র ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়।


এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের উপর অতর্কিত হামলা, পুলিশ সদস্য খুনসহ স্থাপনা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দেশে প্রায় ৪৫০টি থানা আক্রমণ করে অগণিত পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে; যা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সামিল। এহেন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশের অধস্থন কর্মচারী সংগঠন আজ ৬ আগস্ট থেকে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করছে।


পুলিশ জনসাধারণের সঙ্গে কোনোভাবেই বৈরিতাপূর্ণ সম্পর্কে জড়াতে চায় না জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পুলিশ বাহিনী হিসেবে নিরীহ ছাত্রদের সঙ্গে যে অন্যায় করেছে তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’


বাংলাদেশ পুলিশ এসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার দেশের ৪৫০টিরও বেশি থানা ‘আক্রান্ত’ হয়েছে।


সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশ ছাড়ার পর বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজিত মানুষজন থানা ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন।


কোন কোন থানায় হামলা ঠেকাতে গুলি এবং টিয়ারগ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ।


এসময় বেশ কিছু থানা থেকে সরে যায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।


ঢাকায় ‘অধিকাংশ’ থানায় পুলিশ নেই

ঢাকার যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আদাবরসহ বিভিন্ন থানায় রাতভর হামলা এবং লটুপাটের ঘটনা ঘটে।


সোমবার দিনব্যাপী থানায় থানায় এসব হামলা হলেও রাতে বিভিন্ন থানা থেকে সরে যান আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।


মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে মোহাম্মদপুর থানার সামনে গিয়ে বিবিসির সংবাদদাতারা দেখতে পান, পুরো থানা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।


থানার ভেতর থেকে ফ্যান, চেয়ার-টেবিল, ফ্রিজ, তোষক-বালিশসহ নানা ধরণের জিনিসপুত্র লুট হয়ে গেছে রাতেই।


ওই থানায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সোমবারই নিরাপত্তা সংকটে থানা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।


মোহাম্মদপুর থানার একজন এসআই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে জানান, থানার ভেতরে থাকা ‘সব অস্ত্র এবং গোলাবারুদ লুট হয়ে গেছে’।


তবে, হাজতখানায় যেসব আসামি ছিলো সোমবার সকালের মধ্যেই তাদের আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল, ফলে কোন আসামির ক্ষতি হয় নি।


মোহাম্মদপুর থানার দুই কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত আদাবর থানা। সোমবার সেখানেও হামলা এবং ব্যাপক লুটপাট হয়েছে।


ভবনের সামনে রাখা পুরনো গাড়ি, পিকআপ ভ্যান, মোটরসাইকেল লুঠ হয়ে হয়েছে। বিকল কয়েকটি পড়ে থাকা গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন