২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০৪:৩৯:১৪ পূর্বাহ্ন
বাদাম বিক্রেতা থেকে ৫০০ কোটির মালিক শাহু: বাপ-বেটা মিলে ত্রাসের রাজত্ব
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৮-২০২৪
বাদাম বিক্রেতা থেকে ৫০০ কোটির মালিক শাহু: বাপ-বেটা মিলে ত্রাসের রাজত্ব

এক সময় ছিলেন বাদাম বিক্রেতা। কখনো ভবঘুরে, আবার কখনো টোকাই নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি। পড়া-লেখাও করেননি। থেকে গেছেন স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন হিসেবে। পরের জমিতে কাজও করতেন কখনো কখনো। সেই তিনি জমির দালালি করতে গিয়ে পেয়ে জান আলাদিনের চেরাগ। একসময় নিজেই হয়ে উঠেন ভূমিদস্যূ। টাকার জোরে এলাকায় কাউন্সিলরও নির্বাচিত হোন তিনবার। তাঁর এলাকায় তাঁকে ভোট দিতে না চাইলে সেই পরিবারে নেমে আসত অত্যাচার-নির্যাতন বা হয়রানির খড়গো। সেই কাউন্সিলরকে নিয়ে এর আগেও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদক মামলাও করেছেন। কিন্তু এসবকে পাত্তা না দিয়ে বরাবরই তিনি ছিলেন দাপটে।


সেই তিনি হলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু। এই শাহুর সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে সনি হোসেনও এলাকায় চাঁদাবাজ নামে পরিচিত। তবে গত ৫ আগস্টের পর থেকে বাপ-ছেলে দুজনই এলাকা ছাড়া। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী শাহুর ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাংচুরসহ তাঁর টাইলস ও রড-সিমেন্টের দোকানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটও চালায়।


এলাকাবাসীর অভিযোগটাইলস ও রড-সিমেন্টের ব্যবসা দেখেন শাহুর বড় ছেলে সনি। সনির এই দোকান থেকে বাজার দরের চেয়ে বেশি মূল্যে টাইলস ও রড সিমেন্ট না কিনলে ওই এলাকায় কেউ সুষ্ঠভাবে বাড়ি নির্মাণের কাজ করতে পারবেন না। ওই জায়গা দখল করা হয়, না হলে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সেই জমির মালিককে নানাভাবে হয়রানি করে বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। এভাবেই বাবার ক্ষমতার দাপটে ছেলে সনিও করেছেন রাজত্ব। একদিকে বাপ শাহু মানুষের জমি দখল করে বানিয়েছেন অন্তত ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ। আরেকদিকে ছেলে ব্যবসার নামে মানুষকে হয়রানি করে চাঁদাবাজি করে হয়েছেন কোটিপতি। সেই টাকার দাপটে বাপ-বেটা মিলে এলাকায় কায়েম করেন ত্রাসের রাজত্ব।


অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের জুনে অনুষ্ঠিত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নির্বাচনে চতুর্থ বারের মতো অংশ নেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু। হলফ নামাতেও তিনি স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন উল্লেখ করেন। হলফ নামায় স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন শাহু’র নগদ টাকা ছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা ছিল বলে উল্লেখ করেন। যাকে বলা যায়, টাকার পাহাড়ে বসেছিলেন তিনি। আর বাৎসরিক আয় দেখানো হয় প্রায় এক কোটি টাকা। ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছিল প্রায় তিন কোটি টাকা।


দুদক সূত্র মতে, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহুর বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই অভিযোগে তাঁর স্ত্রী নাজমা আলীর বিরুদ্ধেও আলাদা আরেকটি মামলা করা হয়। দুদকের সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে দুজনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করা হয়। দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।


শেয়ার করুন