নির্বাচন কমিশন (ইসি) কিছু শর্তসাপেক্ষে নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের নির্বাচনি ব্যয়ে অর্থায়ন করবে। নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ফান্ড থেকে প্রার্থী ও দলের নির্বাচনি ব্যয়ের একাংশ বহন করা হবে। এ জন্য ‘জন তহবিল আইন’ প্রণয়নের উদ্যোগও নিচ্ছে এই সাংবিধানিক সংস্থাটি।
জানা গেছে, এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠনের পর ইসি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য পৃথক চারটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) এই কমিটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত বিদ্যমান বিভিন্ন আইন ও বিধিগুলো যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়। কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদকে সভাপতি করে গঠিত ৮ সদস্যের এই কমিটির বাকি সাত জন ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তা। এর মধ্যে সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচন সহায়তা ও সরবরাহ উপসচিব।
কমিটি দুটি আইন প্রণয়নের সুপারিশ করে। আইন দুটি হলো- সংবিধান অনুসারে নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন এবং নির্বাচনি প্রচারণা ব্যয় (জন তহবিল) আইন প্রণয়ন। এর মধ্যে প্রথম আইনটি একাদশ জাতীয় সংসদের সময়কালে করা হয়েছে। অবশ্য তৎকালীন সরকার তড়িঘড়ি করে প্রণয়ন করা এই আইনটি নতুন করে সংশোধনের দাবি উঠেছে।
অপর দিকে নির্বাচনি প্রচারণা ব্যয় (জন তহবিল) আইনটি নিয়ে অতীতে নানা আলোচনা হলেও কখনো আলোর মুখ দেখেনি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটিএম শামসুল হুদা কমিশন রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের অনুকূলে সরকারি অর্থায়ন বা অনুদান দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১১ সালে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছিল। তাদের প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছিল, নিবন্ধিত দল আগের সংসদ নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীক নিয়ে অংশগ্রহণ করা আসনগুলোতে প্রদত্ত বৈধ ভোটের ৫ শতাংশ পেলে জন তহবিল থেকে কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত খাতে নির্বাচনি ব্যয় নির্বাহের জন্য আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পূর্ববর্তী নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে এবং বর্তমানে নির্বাচনি এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে এ সহায়তা পাওয়ার যোগ্য হবেন। নির্বাচনি ফলাফল গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে তহবিলপ্রাপ্তদের নির্ধারিত ফরমে তহবিলের অর্থ ব্যয়ের একটি রিটার্ন কমিশনে দাখিল করতে হবে, যা মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অফিস কর্তৃক অডিট করানো হবে।