প্রশ্ন: কবরের উপর কোনো কিছু লিখে রাখা কেমন? কোনো কোনো কবরের পাশে কুরআনের আয়াত, কালিমা, দোয়া বা কোনো নসিহত লিখে রাখতে দেখা যায়। আবার কোনো কবরে মৃতের নাম ঠিকানা মৃত্যু তারিখ লেখা থাকে। এ ধরনের কোনো কিছু লেখার সুযোগ আছে কি?
উত্তর: কবরের উপর কুরআনের আয়াত লেখা জায়েজ নয়। এতে কুরআন মাজিদের সম্মানহানী হয়। আর কালিমা বা অন্যান্য দোয়া-দরূদও কবরে লেখা যাবে না।
হাদিস শরিফে কবরে কিছু লিখতে নিষেধ করা হয়েছে। হজরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবর চুনা করতে, কবরের উপর কিছু লিখতে, তার উপর কিছু নির্মাণ করতে ও কবর পাড়াতে নিষেধ করেছেন। (জামে তিরমিযী, হাদিস ১০৫২)
আর কবরস্থ ব্যক্তির পরিচয়ের জন্য কবরের পাশে তার নাম লিখে রাখার অবকাশ আছে। কেননা অন্য দলিল দ্বারা প্রমাণিত যে, কবরের চিহ্ন রাখা জায়েজ। তাই শুধু নাম ঠিকানা লিখতে পারবে।
ফকীহগণ বলেন, নাম ঠিকানা লেখা হাদিসের নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়।
সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত হয়েছে- অর্থাৎ উসমান ইবনে মাযউন (রা.) ইন্তেকালের পর তার দাফন শেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনকে একটি পাথর নিয়ে আসার আদেশ দেন। কিন্তু সেই সাহাবী তা বহন করে আনতে সক্ষম হননি।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথরটি নিজ হাতেই বহন করে উসমান ইবনে মাযউন রা.-এর মাথার কাছে এনে রাখেন এবং বলেন, এর দ্বারা আমার (দুধ) ভাইয়ের কবর চিহ্নিত করে রাখলাম এবং পরবর্তীতে আমার পরিবারের কেউ মারা গেলে এর কাছাকাছি দাফন করব। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩২০৬; আততালখীসুল হাবীর, ইবনে হাজার, ২/২৬৭)
সূত্র: কিতাবুল আছার ১/২৬৬; মিরকাতুল মাফাতীহ ৪/১৬৬; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৬২৭; আলবাহরুর রায়েক ২/১৯৪; রদ্দুল মুহতার ২/২৩৭