বরগুনায় রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ইলিশের দাম। বরগুনার পাথরঘাটার পাইকারি বাজারে বড় আকৃতির ইলিশ মণ প্রতি (৪০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকায়। অর্থাৎ প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়ছে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে। তবে সাগর নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না পর্যাপ্ত ইলিশ। তাই চাহিদার তুলনায় ইলিশের যোগান কম। এই পরিস্থিতিতে রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে ইলিশে দাম।
বরগুনার পাথরঘাটা পাইকারি মৎস্য বাজারে এক কেজির উপরের ওজনের ইলিশের মণ (৪০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির নিচের ওজনের ইলিশের মণ বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায়। ৫০০ গ্রাম থেকে ৮০০ গ্রামের নিচের সাইজের ইলিশের মন বিক্রি হচ্ছে ৪৮ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা। ৩'শ গ্রাম থেকে ৩'শ ৫০ গ্রামে ওজনের ইলিশের মন বিক্রি হচ্ছে ২৮ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
পাইকারি বিক্রেতা আলামিন হোসেন বলেন, একদিকে পহেলা বৈশাখের কারণে ইলিশ মাছের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। তবে চাহিদার তুলনায় যোগান কম। তাই মাছের দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।
জেলে মোহাম্মদ রবিউল, কাউসার হোসেনসহ কয়েকজন জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগর ও নদীতে অবৈধ জাল (সূক্ষ ফাঁস) দিয়ে ইলিশের পোনা (ছোট মাছ) নষ্ট করছে কিছু জেলে। এ কারণে সাগরে ও নদীতে মাছ কমে যাচ্ছে। আমরা পর্যাপ্ত মাছ ধরতে পারছি না। যে মাছ পাচ্ছি তাতে আমাদের খরচ হচ্ছে না। আমরা দিন দিন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছি।
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, অবৈধ মাছ ধরার ট্রলারের কারণে নির্বিচারে মারা যাচ্ছে ছোট ইলিশ। আর এ কারণে দিন দিন সাগর ইলিশ শূন্য হয়ে পড়ছে। তাছাড়া বৈধ ট্রোলিং জাহাজের মাছ ধরার কথা রয়েছে বঙ্গোপসাগরের ৪০ মিটার গভীর পানিতে। কিন্তু তারা পাঁচ থেকে সাত মিটার পানিতে এসে মাছ শিকার করছে। মূলত কম পানিতে ছোট ইলিশ মাছগুলো খাবার খেতে এসে অবৈধ জলে ধরা পড়ে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ইলিশ শিকার হয়েছে ১ হাজার ৫৮২ মেট্রিক টন। তা কমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৯৪ মেট্রিক টনে। অর্থ্যাৎ গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ১৮৮ মেট্রিক টন ইলিশ কম শিকার হয়েছে।
পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হক বলেন, প্রাকৃতিক কারণ ও অবৈধ জলে ইলিশের পোনা শিকারের ফলে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশের পরিমাণ কম। অবৈধ জাল বন্ধ করতে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।