বরগুনায় পুলিশের হাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রহৃত হওয়ার ঘটনার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বরগুনায় বাড়াবাড়ি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে তার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাক্ষাৎ করেন।
বরগুনায় এ ঘটনা কেন ঘটেছে- সেই বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শককে দেখতে বলা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সোমবার বরগুনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই ভিডিও ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছড়িয়ে পড়ার ভিডিওতে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে ঔদ্ধত্য ভঙ্গিতে কথাও বলতে দেখা যায়।
বরগুনার ঘটনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বরগুনার ঘটনা যেটা আমরা দেখেছি, এটা একটু বাড়াবাড়ি করেছেন। কেন অহেতুক এটা হলো আইজি সাহেবকে (পুলিশ মহাপরিদর্শক) বলা হয়েছে, আইজি সাহেব ব্যবস্থা নিচ্ছেন।’
কার বাড়াবাড়ি ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা তো আমি ফেসবুকে দেখেছি, আপনারা যেমন দেখেছেন। এটার একটা তদন্ত কমিটি হয়েছে, তদন্ত হয়ে আসুক। আমার কাছে মনে হয়েছে, এ জিনিসটা এতখানি বাড়াবাড়ি করাটা উচিত হয়নি।’
‘কার বাড়াবাড়িটা ছিল সেটা জানা যাবে ইনভেস্টিগেশনের পর। আমি যেটা বলেছি, সেটা বলছি যে, ঘটনাটা ঘটা উচিত হয়নি।’
একজন পুলিশ সদস্য জনপ্রতিনিধিকে এভাবে বলতে পারেন- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো অনেক কিছু দেখেছি, আবার অনেক কিছু দেখিনি। ফেসবুকে হয়তো এক অ্যাঙ্গেলে ভিডিওটি আসছে, অন্য অ্যাঙ্গেল থাকতে পারে, সেটা তো আমি দেখিনি। তাই সেই কথা আমি বলতে চাই না। আমি যেটুকু দেখেছি তাতে মনে হয়েছে যে এটা না হলেও পারত। ঘটনাটা এভাবে ঘটানো উচিত হয়নি, সেটাও আমি বলেছি। ’
আজ আপনি ৪০ জন নতুন পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে কথা বলেছেন। তাদের কী ব্রিফ করেছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখুন আমাদের কাজটিই হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা, দেশে শান্তির পরিস্থিতি বিরাজ করানোর জন্য যা যা করা দরকার আমরা সেগুলোই করে যাচ্ছি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশের ভূমিকাটা থাকে মুখ্য।’
‘সেজন্য পুলিশ অফিসার, যিনি এসপি জেলার দায়িত্বে থাকেন তার কার্যকলাপটা সবার চোখে পড়ে এবং এটাই প্রণিধানযোগ্য হয়। তাদের বলেছি, আইনশৃঙ্খলার অবণতি হলে আপনি দায়ী থাকবেন। জেলা প্রশাসক সবার সঙ্গে সমন্বয় করে, আপনারা সেখানে কাজ করবেন। নির্বাচন আসছে, নির্বাচনে যাতে কোনো সহিংসতা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কারও প্রতি আনুকূল্য কিংবা কারও প্রতি বিরাগ দেখানোর কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে যে যার কাজ করবে। সেখানে অন্যায় কোনো কাজ করলে, দেশদ্রোহী কোনো কাজ করলে, জানমালের কোনো ক্ষতি হলে সেখানে আপনি ত্বরিত অ্যাকশন নেবেন- এটাই ছিল আমাদের কথা।’