২৯ নভেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০২:২৩:২৫ পূর্বাহ্ন
রাজশাহী রামেকে ৩৬ কোটি টাকার বায়োলজিক ইনজেকশন অনুদান
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-১১-২০২৫
রাজশাহী রামেকে ৩৬ কোটি টাকার বায়োলজিক ইনজেকশন অনুদান

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ডিরেক্ট রিলিফ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকার অত্যাধুনিক বায়োলজিক ইনজেকশন দিয়েছে। প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় চার লাখ টাকা, তবে রোগীরা এগুলো পাবেন সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে।


গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় পৌঁছানো ইনজেকশনগুলোর কাস্টমস প্রক্রিয়া শেষে আজ শুক্রবার সকালে তা রামেকে আনা হয়েছে। ইনজেকশনের মেয়াদ আগামী বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক ডিরেক্ট রিলিফের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওষুধ আনার উদ্যোগ নেন। সার্বিক সহযোগিতা করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহমেদ।


চিকিৎসকদের মতে, অ্যাডালিমুমাব নামের এই ইনজেকশনটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিস, অ্যাংকাইলোজিং স্পন্ডাইলাইটিস, জুভেনাইল ইডিওপ্যাথিক আর্থ্রাইটিসসহ কয়েক ধরনের অটোইমিউন রোগের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর। সাধারণ চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে না আসা জটিল রোগীদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী। একজন রোগীর একাধিক ডোজ লাগতে পারে, তবে বায়োলজিক হওয়ায় এর উল্লেখযোগ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলেই চিকিৎসকেরা জানান।


রাজশাহী মেডিকেলের সঙ্গে ডিরেক্ট রিলিফের যোগাযোগের সূত্রপাত কলেজের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শীর্ষ শ্রেয়ার-এর হাত ধরে। আন্তর্জাতিক গবেষণায় অর্জিত স্বীকৃতির পর ডিরেক্ট রিলিফের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক গর্ডন উইলকক শীর্ষকে ই-মেইলে জানান, প্রতিষ্ঠানটি রামেকে স্ট্রোক চিকিৎসার ইনজেকশন অ্যাল্টেপ্লেস দিতে চায়।


এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ আগস্ট রামেকে পৌঁছায় আড়াই হাজার ভয়াল অ্যাল্টেপ্লেস—বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি টাকা। স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকজনিত জমাট রক্ত গলানোর এই ওষুধের ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যেই হাসপাতালের রোগীদের প্রয়োগ করা হয়েছে।


ওই সাফল্যের পর এবার বাতের ইনজেকশন আনার উদ্যোগ নেন অধ্যাপক আজিজুল হক। দুই মাস আগে তিনি ডিরেক্ট রিলিফের কাছে বায়োলজিক ইনজেকশন সরবরাহের অনুরোধ করেন। সংস্থাটি দ্রুত সাড়া দিলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ।


অধ্যাপক আজিজুল হক বলেন, “বাংলাদেশে অ্যাডালিমুমাবের কপি সংস্করণ থাকলেও সেটিও খুব ব্যয়বহুল। গরিব মানুষের নাগালের বাইরে। ডিরেক্ট রিলিফের এই অনুদানে অনেক রোগী দীর্ঘ সময় ব্যথামুক্ত থাকতে পারবেন।”


হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ বলেন, “১৭ কোটি টাকার স্ট্রোক ও হৃদ্‌রোগের ওষুধ এখনো বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে নতুন এ ইনজেকশন অসচ্ছল রোগীদের জন্য আশীর্বাদ হবে। কারা ইনজেকশন পাবেন, তা নির্ধারণ করবেন অধ্যাপক আজিজুল হক।”


শেয়ার করুন