২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৫২:২০ অপরাহ্ন
শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে কলেজে পরিচালনা কমিটি করার পরামর্শ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২২
শিক্ষাবিদের সমন্বয়ে কলেজে পরিচালনা কমিটি করার পরামর্শ

দেশের সরকারি-বেসরকারি স্নাতক-স্নাতকোত্তর কলেজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে পরিচালনা কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে যে কোনো নামে সেটি গঠন করা যেতে পারে।


মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক কর্মশালায় এমন পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে এমন প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সরকারি কলেজের প্রধানরা।


জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সরকারি-বেসরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করছে সরকার। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে শিক্ষার মান বাড়াতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় একটি অভিন্ন নীতিমালার খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। সেখানে গভর্নিং বডির সভাপতি পদে শিক্ষাবিদকে নির্বাচন, কোচিং নির্ভরতা কমানো, শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা করা, আইসিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।


এসডিজি-৪ বাস্তবায়নের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর মান বাড়তে বিশিষ্টজনের গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে একটি অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। তার ওপর মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।


কর্মশালায় এ নীতিমালার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত অর্নাস-মার্স্টাস কলেজে নয়, সরকারি কলেজে শিক্ষকদের জবাবদিহিতা বাড়াতে পরিচালনা কমিটি গঠন করা দরকার। সেটি মনিটরিং কমিটি গঠন, গভর্নিং বডি বা উপদেষ্টা কমিটি নামে গঠন করা যেতে পারে।


দীপু মনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি অর্নাস-মার্স্টাস কলেজের মান ও শিক্ষকদের জবাবদিহিতা বাড়ানো প্রয়োজন। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সেটি এ নীতিমালায় বলা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়বে।


এ বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন হতে পারে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মশিউর রহমান তার মতামতে এ বিষয়ে জোর দেন।


শিক্ষামন্ত্রীর এমন প্রস্তাবের পরেই সরকারি কলেজ প্রধানরা তার প্রতিবাদ জানান। তারা জানান, বেসরকারি কলেজে শিক্ষক নিয়োগ, বেতন-ভাতা নিশ্চিতসহ কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন কাজ করে থাকেন। সরকারি কলেজে সে ধরনের কাজ থাকে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সেসব কাজ করা হয়ে থাকে।


সরকারি কলেজের প্রধানদের দাবি, সরকারি কলেজ দেখভালে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ জেলার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ কারণে কমিটি গঠন নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন।


তবে কোনো কমিটি গঠন না করে এক কলেজের শিক্ষক পার্শ্ববর্তী অন্য কলেজের পরিদর্শন ও মনিটরিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন তারা।


জানতে চাইলে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রোগ্রাম অফিসার প্লানিং ড. এ কে এম খলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বেসরকারি অর্নাস-মার্স্টাস কলেজগুলোর শিক্ষার মান বাড়াতে সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। সেটিকে কেন্দ্র করে বাস্তবায়নযোগ্য ‘ন্যাশনাল স্ট্রাটেজিক প্ল্যান’ প্রণয়নের কাজ চলমান। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এসইডিপি) মাধ্যমে ছয়টি ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি ফাইন্ডিংসের মাধ্যমে একটি নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে।


তিনি বলেন, এটির ওপর মঙ্গলবার একটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়। নীতিমালার সব বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা করা হয়েছে। কিছু শব্দগত পরিবর্তন করা হবে। সেসব সংশোধন করে স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আরেকটি সভা করে শিগগির নীতিমালাটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।


কর্মশালায় অন্যদের উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ডীন, ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রমুখ।

শেয়ার করুন