মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কায়াহ রাজ্যে ২০২১ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার সেনা সদস্য নিহত হয়েছে। একই সময়ে জান্তা সরকারের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দেড় শতাধিক সশস্ত্র প্রতিরোধ যোদ্ধা।
গতবছর দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের জেরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত মে মাস থেকে এ অঞ্চলে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলি, বিমান ও কামান হামলার খবর পাওয়া গেছে। অঞ্চলটিতে ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ), কারেন আর্মিসহ (কেএ) আরও কয়েকটি সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার প্রোগ্রেসিভ কারেন পিপল ফোর্স (পিকেপিএফ) মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা একটি গোষ্ঠী দাবি করে যে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত কায়াহতে ১৪৯৯ জন শাসক সেনা নিহত হয়েছে। একই সময়ে নিহত হয়েছে ১৫১ জন প্রতিরোধ যোদ্ধা। অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ৪৫৪টি। জান্তা সরকার বাহিনী বেসামরিক লোক ও প্রতিরোধ যোদ্ধাদের টার্গেট করে ১৫৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে ওই অঞ্চলে।
পিকেপিএফ আরও বলছে যে গত ১৫ মাসে কায়াহতে ২৬১ জন বেসামরিক লোক এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত আরও ৬১ জন নিহত হয়েছে। জান্তা সরকার বাহিনী গ্রেফতার করেছে আরও ২৬১ জনকে।
শাসক গোষ্ঠীর বিমান ও কামান হামলা এবং অগ্নিসংযোগে ১ হাজার ১৮০টি বাড়ি পুড়ে গেছে এবং ২৫টির মতো ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। বর্তমানে প্রায় কায়াহ থেকে ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাজ্যের প্রবেশমুখগুলো বন্ধ করে দেওয়ায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে।
সেন্ট্রাল রিজিয়ন স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ, যারা কায়াহতে জান্তা সরকার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দিচ্ছে তারা শুক্রবার জানিয়েছে, ১৬ থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে কায়াহতে কেএনডিএফ, কেএ এবং পিডিএফসহ সম্মিলিত প্রতিরোধ বাহিনীর হাতে ৬১ জন সেনা নিহত হয়েছে।
জান্তা সরকার ওই রাজ্যে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর দাবি, কায়াহ রাজ্যের বেসামরিক নাগরিক ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোকে টার্গেট করে হামলা চালানো অব্যাহত রেখেছে তারা।