জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় মাদাগাস্কারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে গণভোটের মাধ্যমে রুশ ভূখণ্ডে যুক্ত করার নিন্দা জানিয়ে গত সপ্তাহে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছিলেন তিনি।
বুধবার মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় তাকে বরখাস্তের এই তথ্য জানা গেছে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে নিজ ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়ে রাশিয়ার প্রচেষ্টার নিন্দা জানায় জাতিসংঘ। মূলত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ভোটাভুটির মাধ্যমে এ নিন্দা জানায়।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ নিন্দা প্রস্তাবে সমর্থন দেয় ১৪৩ দেশ। তবে চীন ও ভারতসহ ৩৫ দেশ ভোটদান থেকে বিরত ছিল। অন্যদিকে রাশিয়ার পাশাপাশি বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং নিকারাগুয়া এই চারটি দেশ ভোট প্রত্যাখ্যান করে।
জাতিসংঘের এই প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রাশিয়ার সংযুক্তিকরণকে স্বীকৃতি না দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ইউক্রেন ভূখণ্ড থেকে রুশ দখলদারিত্ব ‘অবিলম্বে প্রত্যাহার’-এর দাবিও করা হয়েছে। এ ছাড়া এ প্রস্তাবে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত কমানোর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানানোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রি রাজোয়েলিনার কার্যালয়ের দুই সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, রাশিয়াকে নিন্দা জানানোর প্রস্তাবে যারা সমর্থনে ভোট দিয়েছেন, তাদের একজন হওয়ার কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিচার্ডে র্যান্ড্রিয়ামান্দ্রাটোকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ আফ্রিকার অনেক দেশকে বিব্রতকর কূটনৈতিক অবস্থানে ফেলেছে। অনেকেরই পশ্চিম এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সম্পর্কের জটিল ইতিহাস রয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর কিছু পশ্চিমা দেশকে হতাশ করে আফ্রিকার এসব দেশ মূলত যুদ্ধে কোনো পক্ষ নেওয়া এড়িয়ে গেছে।
গত সপ্তাহ পর্যন্ত মাদাগাস্কার ইউক্রেনের সংকট সংক্রান্ত রেজুলেশনের বিভিন্ন ভোটের সময় ভোটদান থেকে সবসময় বিরত ছিল। সরকার এ বিষয়ে নিরপেক্ষতা ও জোটনিরপেক্ষতার কথা উল্লেখ করেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন আরও বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ হারানোর পর রিচার্ড র্যান্ড্রিয়ামান্দ্রাটো অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটে বিরত থাকা ৩৫ দেশের মধ্যে ১৮ আফ্রিকান দেশ ছিল। এ ছাড়া রাশিয়া, বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া এবং নিকারাগুয়া প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়।