রাজশাহীর তানোরে এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বোনকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে ভাইকে পিটিয়ে টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার লুট করা হয়েছে। এঘটনায় তাদের পিতা নারায়নপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন বাদী হয়ে ৪ কিশরগ্যাং বখাটের বিরুদ্ধে ঘটনার দিন থানায় একটি মামলা করেছেন।
যার মামলা নম্বর- ২৭/৩৩৬। কিন্তু ওসি প্রভাবিত হয়ে রহস্যজনক কারণে থানায় শুধু চুরি ও সামান্য মারধরের মামলা রুজু করে দায় সেরেছেন। তবে, থানায় এমন মামলা রেকর্ডের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে ওই এলাকায় চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
মামালার এজাহার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তালন্দ ইউপির নারায়নপুর গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন মাস্টারের মেয়ে (২১) তাঁর দাদী মা অসুস্থ হওয়ার খবরে ২৮ অক্টোবর শুক্রবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে দেবিপুর মোড়ে পৌঁছান। পরে তাঁর আপন ভাই ফয়সাল হাসান (১৬) মোটরসাইকেল যোগে নিতে যায়। সেখান থেকে নারায়নপুর বা নিজ বাড়ির আসার পথে লালপুর নামক বাজারে এক দোকানের সামনে মোটরসাইকেল স্লো করে। এসময় উপজেলার লালপুর গ্রামের মাহফুজের ছেলে কিশরগ্যাং বখাটে শিশির (২১), মাহবুরের ছেলে আকাশ (২২) মতিউরের ছেলে সুজন (২০) ও আশরাফের ছেলে মানিক রাজ (২৮) ছাড়াও বেশ কয়েকজন বখাতে অশ্লীল অশভ্য আজেবাজে কথা বলে প্রকাশ্যে উড়না টেনে ইভটিজিং ঘটনায়। এছাড়াও পথরোধ করা হয়।
তাদের এহেন আচরণের কারণ জানতে চাইলে মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় কিশোরগ্যাং বখাতেরা। পরে প্রতিবাদে এগিয়ে গেলে ক্রিকেট খেলার ব্যাট স্ট্যাম্প দিয়ে বেধরক পিটিয়ে কালশিরা জখম করে। পরে ওই ছাত্রীর কয়েক ভরি স্বর্ণলঙ্কার লুট করে নেয় বখাটেরা। এছাড়াও তাদের সঙ্গে থাকা কয়েক লাখ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়া হয়। ওই মেয়ে ময়মনসিংহ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এব্যাপারে মামলার বাদী শিক্ষক আলাউদ্দিন বলেন, উপজেলার লালপুর গ্রামের কিশোরগ্যাং ওইসব বখাটেরা তাঁর স্কুলের ছাত্রীদের ইভটিজিং ঘটনায়। একারণে তাদের ডেকে সাবধান করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় তারা। এঘটনার পরে তাঁর ছেলে ও মেয়ে দেবিপুর মোড় থেকে বাড়ি আসার পথে লালপুর বাজারে ভিড়ের মধ্যে মটরসাইকেল স্লো করে। এহেন সময় শিশির, আকাশ, সুজন ও মানিক রাজ মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে বেধড়ক পেটায়।
পরে জোরপূর্বক তাঁর মেয়ের কাছে থাকা টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার লুট করা হয়। শুধু এহেন ঘটনা নয়, তাঁর মেয়েকে প্রকাশ্যে ইভটিজিং করা হয়েছে। এসব ঘটনা নিয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু ওসি সাহেব আসামী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রহস্যজনক কারণে শুধু চুরি ও সামান্য মারধরের মামলা রুজু করে দায় সেরেছেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ঘটনার সুস্থ তদন্ত দাবি করেছেন।
এবিষয়ে তানোর থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, মনে হয় তাদের মধ্যে পূর্ব কোন শক্রতা ছিলো। তবে, ঘটনাটি নিয়ে চুরি ও সামান্য মারধরের মামলা থানায় রুজু করা হয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে এড়িয়ে গেছেন ওসি।