নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার বিরুদ্ধে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে উঠে বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চের আরও দুই নেতার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
সরকার ও শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে ঐক্যবদ্ধ হতে এবং রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে বাধা, হামলা-মামলা, দমন-পীড়ন, গুলি ও হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে অনুষ্ঠান শুরু হলে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। শহীদ মিনারের মূল বেদিতে অতিথিদের আসনের ব্যবস্থা করা হয়। একে একে অতিথিদের বক্তব্য শেষে সন্ধ্যায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য দেন। তবে বক্তব্য দেয়ার সময় দেখা যায়, তিনি জুতা পায়ে হেঁটে আসেন। শহীদ মিনারের মূল বেদির দুই ধাপ নিচে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে জুতা পায়ে প্রায় ১৮ মিনিটের বেশি সময় তিনি বক্তব্য দেন।
এর আগে বিকেলে জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রশীদ চৌধুরী ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমানকেও জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ স্থানীয় নেতারা।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, শহীদ মিনারের পবিত্রতা যারা রক্ষা করতে পারে না, তারা দেশের পবিত্রতা কীভাবে রক্ষা করবে?
তবে সমাবেশের আয়োজক সংগঠন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘আমার দলসহ সাতটি দল অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্বে ছিল। শহীদ মিনারের বেদিতে অতিথিরা বক্তব্য দিয়েছেন। জুতা পায়ে শহীদ মিনারে ওঠার বিষয়টা আমাদের চোখে পড়েনি। তবে জুতা পায়ে কেউ শহীদ মিনারে উঠে থাকলে এটা ঠিক হয়নি। আমরা এটার সমর্থন করি না। এটা কেউ করে থাকলে, মনের ভুলে করেছেন।’
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায় বলেন, ‘শহীদ মিনারে জুতা পায়ে ওঠার প্রশ্নই আসে না। এমনকি জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতেও ওঠা যায় না। শহীদদের সম্মান জানানোর জন্য এটা করা হয়। কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এ কাজ করে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার মনে হয়, ওই রাজনীতিকের ভাষাশহীদদের বিষয়ে কোনো চেতনা নেই।’
জুতা পায়ে শহীদ মিনারের সিঁড়িতে ওঠার বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি বলেন, ‘শহীদ মিনারে যাওয়ার সময় খালি পায়ে যাওয়ার নিয়ম। যারা জুতা পায়ে ওঠে, তাদের চৈতন্য চিন্তা নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করে, কেন করে বুঝি না। যদি কেউ জুতা পায়ে উঠে থাকে, তারা অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’