নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ইরানে চলা বিক্ষোভে অংশ নেওয়াদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে গ্রেফতার হয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ভাগনি ফরিদা মোরাদখানি।
মানবাধিকারবিষয়ক বার্তা সংস্থা এইচআরএনএ জানায়, ফরিদাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তেহরানের এভিন কারাগারে রাখা হয়েছে। খবর সিএনএনের।
ফরিদা মোরাদখানি পেশায় প্রকৌশলী। তারা বাবা ছিলেন ইরানের সরকারবিরোধীদের একজন। যদিও তিনি খামেনির বোনকে বিয়ে করেছিলেন।
তিনি বলেন, পুলিশের এমন আচরণের জবাবে তেহরানের সঙ্গে গোটা বিশ্বের সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত।
এক ভিডিওবার্তায় ফরিদা বলেন, হে স্বাধীন মানুষ, আমাদের সঙ্গে থাকুন এবং আপনার সরকারকে বলুন— এই খুনি ও শিশু হত্যাকারী শাসনকে সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে। এ শাসনব্যবস্থা কোনো ধর্মীয় নীতির প্রতি অনুগত নয়। তারা বলপ্রয়োগ ও ক্ষমতায় টিকে থাকা ছাড়া কোনো কিছু জানে না।
গত ২৩ নভেম্বর ফরিদাকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরই তার ভিডিওবার্তাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে খামেনির অফিস থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
ভিডিওটি শুক্রবার ইউটিউবে শেয়ার করেন ফরিদার ভাই ফ্রান্সের বাসিন্দা মাহমুদ মোরাদখানি। যিনি নিজেকে তার টুইটার অ্যাকাউন্টে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের বিরোধী এবং বিশিষ্ট ইরানি অধিকারকর্মী হিসেবে পরিচয় দেন।
২৩ নভেম্বর মাহমুদ মোরাদখানি জানান, তার বোনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বছরের শুরুতেও ফরিদাকে গ্রেফতার করেছিলেন ইরানের গোয়েন্দারা। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
এইআরএনএর হিসাবে, ইরানে চলমান বিক্ষোভে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ৪৫০ আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬৩টি শিশু রয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর ৬০ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত আটক আছেন ১৮ হাজার ১৭৩ জন।
সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যু হয় গত ১৬ সেপ্টেম্বর। সেদিন থেকেই প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে গোটা ইরানে।