২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:২৯:৪৯ অপরাহ্ন
মাঘের শীতে যা করবেন, যা করবেন না
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০১-২০২৩
মাঘের শীতে যা করবেন, যা করবেন না

শীতকালের অর্ধেকটা চলে গেছে। পৌষকে বিদায় দিয়ে মাঘ মাস এসে হাজির হয়েছে। 
শুরু হয়েছে মাঘ।

মাঘের শীতের একটা বৈশিষ্ট্য আছে। এ মাসে কুয়াশা থাকে বটে, তবে পৌষের মত তীব্র কুহেলিকা এসে প্রকৃতিকে ঢেকে দেয় না। মাঘে কনকনে ঠাণ্ডা পড়ে।

কনকনে ঠাণ্ডা মানে, আপাত দৃষ্টিতে চারিদিকের সব কিছুই স্বাভাবিক থাকবে, কিন্তু শীতে হাত পা জমে যাবে। বিকাল থেকে শীত বাড়তে থাকে। মাঝ রাতে এসে তাপমাত্রা একটু বেশিই নেমে যায়। সকালের সূর্য এসে শীতকে না-তাড়ানো পর্যন্ত এই কনকনে ঠাণ্ডা দূর হয় না।

সত্যিই যদি শীত অনুভূত হয়, তাহলে বীরত্ব না দেখিয়ে পর্যাপ্ত গরম কাপড়, হাত মোজা, পা-মোজা পরাই শ্রেয়তর। নিজেরা তো পরবেনই, ছোট শিশু এবং বৃদ্ধদের শীত নিবারনের দিকে নজর রাখতে ভুলবেন না। এতে শীত নিবারণ তো হয়ই, মৃত্যুর ঝুঁকিও কমে। আদা, মধু দিয়ে গরম পানি বা হালকা লিকার চা পান করলে শরীর ঈষদুষ্ণ থাকবে। 

আগের দিনে প্রৌঢ় এবং বৃদ্ধরা বলতেন, এই শীতকালটা পার করতে পারলে আরও একটা বছর বেঁচে থাকব। 

শীতকালে রক্তের viscosity (ঘনত্ব, এণ্ডোথেলিয়ামের সঙ্গে আটকে থাকার প্রবণতা) বেড়ে যায়। ফলে ব্রেন স্ট্রোক এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে যায়। বাড়ে মৃত্যুর হারও। 

শীতকালে হাঁপানি, সিওপিডি, নিউমোনিয়া, শীতকালীন ডায়রিয়া রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পায়। 

ধূমপান শরীরকে কিছুটা গরম রাখে। কিন্তু এটা খাল কেটে কুমির আনার নামান্তর। ধূমপানের ফলে রক্তনালি অ্যাথেরোসক্লেরোসড হয়। এর ফলে ব্রেন স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। অল্প বয়সে যারা মৃত্যুবরণ করে, তাদের ইতিহাস নিলে দেখা যায়, তারা হয় ধূমপান কর‍তেন অথবা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগতেন। বার্ধক্যের আগেই মৃত্যু এসে তাদের সব সাধের, সব স্বপ্নের অবসান ঘটায়। 
তাই, শীত নিবারনের জন্য অন্য উপায় না-খোঁজে পর্যাপ্ত পরিমাণ গরম কাপড় পরা উচিত। এর সাথে আদা, মধু দিয়ে গরম পানি বা হালকা লিকার চা পান করলে, সেটা শরীরকে উষ্ণ রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সর্দি কাশি সারাতেও সাহায্য করে। 

শীত তাড়াতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহায়। এই আগুনের উম খুবই আরামদায়ক। আগুন পোহানোর সময় অসাবধানতাবশত অনেকের গায়ে আগুন লাগে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা এ মাসেই বেশি ঘটে। 

আগুন পোহানোর মাসে এসে জাতীয় কবির কয়েকটি লাইন মনে পড়ছে। 

‘যৌবনের হোমকুণ্ড-পাশে বৃদ্ধ বসিয়া 
আগুন পোহাবে, বন্ধু, এ দৃশ্য দেখিতে 
যেন নাহি বাঁচি আর, সমাধি হইতে আর যেন নাহি উঠি, প্রলয়ের আগে।’

লেখক: ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো

ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি ইন্সটিটিউট, ঢাকা

শেয়ার করুন