রাজশাহীর বাগমারায় কাদার বিলে প্রায় আধা কিলোমিটার একটি খাল দীর্ঘদিন খনন না করায় অনাবাদি থাকতো কৃষকের কয়েক’শ বিঘা জমি। খাল ভরাট হওয়ায় ঠিক মতো বিলের পানি নিষ্কাশন হতো না। ফলে ধানের জমিতে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকতো।
জমিতে ধান উৎপাদন করতে না পারায় অনেক কৃষককে ধান-চাল ক্রয় করতে হয়েছে। জমি থেকেও যেন অসহায়ের মতো চলতে হয়েছে কৃষকদের। কাদার বিলে এখন আর কোন জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না। শত শত বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে পারবে কৃষকরা।
উপজেলার বাসুপাড়া, কাচারী কোয়ালীপাড়া ইউনিয়ন ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ?>,স হনা অভ্যন্তরে অবস্থিত কাদার বিল। ৫-৬টি গ্রাম রয়েছে কাদার বিলের চারপাশে। কয়েক হাজার বিঘা ফসলী জমি রয়েছে এই বিলে। কাদার বিলের চারপাশের জমিতে ধান চাষ করা গেলেও মাঝখানে জলবদ্ধতার কারনে ধান চাষ করতে পারতেন না কৃষকরা। স্থানীয় লোকজন যৌথ ভাবে মাছ চাষ করতেন। দীর্ঘদিন মাছ চাষ করলেও কৃষকদের কথা কেউ চিন্তা করেনি। নাম মাত্র লীজমূল্য দিতেন কৃষকদের।
ওই বিলে গভীর নলকূপের মাধ্যমে জমিতে ধানচাষ করতেন কৃষকরা। সেই ধানের চার ভাগের এক ভাগ ধান গভীর নলকূপ কর্তৃপক্ষকে দিতে হতো। গত বছর থেকে নতুন নিয়মে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে কাদার বিলের আওতায় গভীর নলকূপ কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। কৃষকের জমিতে যে পরিমান ধান উৎপাদন হবে তার সবটায় কৃষকরা বাড়িতে নিয়ে যাবে। কাদার বিল যৌথ মৎস্যচাষ প্রকল্পের নতুন উদ্যোগের ফলে বিনামূল্যে কৃষকরা জমিতে ধান উৎপাদন করতে পারছে। সেই সাথে প্রকল্পের পক্ষ থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার খাল খনন করা হচ্ছে। এর ফলে সময় মতো বিল থেকে পানি নিষ্কাশন হবে। পানি নিষ্কাশন হওয়ায় কৃষকরা নির্দিষ্ট সময়ে ধানের আবাদ করতে পারবে।
দেউলিয়া গ্রামের কৃষক তয়েজ উদ্দীন বলেন, আগে আমাদের অনেক জমি পড়ে থাকতো। জলাবদ্ধতার কারনে ধানের আবাদ করতে পারতাম না। মধুপুর গ্রামের আলহাজ¦ জাবেদ আলী জোয়াদ্দার বলেন, আমাদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা ছিল কাদার বিলে যারা মাছ চাষ করেছে তারা বিনামূল্যে আমাদেরকে ধান উৎপাদন করে দিবে কিন্তু তারা দেয়নি। তবে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা বিনামূল্যে ধান উৎপাদন করতে পারছি। আগে ধান উৎপাদন করতে গেলে গভীর নলকূপের অংশ দিতে হয়েছে। গতবছর থেকে আর অংশ দিতে হচ্ছে না।
কাদার বিল যৌথ মৎস্য চাষ প্রকল্পের হিসাবরক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, আমরা তো কৃষকের জমিতে মৎস্য চাষ করছি। মৎস্য চাষ করলে তো কিছু না কিছু লাভ হয়। আমরা লাভের সেই অংশ দিয়ে কাদার বিলের সকল জমিতে বিনামূল্যে ধানের আবাদ করে দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে কাদার বিল যৌথ মৎস্য চাষ প্রকল্প পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, কাদার বিলের জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে প্রকল্পের পক্ষ থেকে একটি খাল খনন করে দেয়া হচ্ছে। খাল খননের ফলে আর কোন জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না। বিলের সকল কৃষক ধান উৎপাদন করতে পারবেন।