২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৩:০৬:২২ অপরাহ্ন
১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১১২৫৪ কোটি টাকা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০২-২০২৩
১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১১২৫৪ কোটি টাকা

দেশে ডলারের তীব্র সংকটের মধ্যে সুবাতাস বইছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের অষ্টম মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম ১৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৫ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৭ টাকা হিসাবে) ১১ হাজার ২৫৩ কোটি টাকার বেশি। সে হিসাবে চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে রেমিট্যান্স আসছে ছয় কোটি ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ডলার বা ৬৬২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, ফেব্রুয়ারির ১৭ দিনে আসা মোট রেমিট্যান্সের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে দুই কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ৮৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৮ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।

তবে আলোচিত সময়ে রাষ্ট্রীয় বিডিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক বা রাকাব, বেসরকারি খাতের বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংক লিমিটেড, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে দেশে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।

ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে গত বছরের ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠাতে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানায়। এছাড়া অন্যান্য উদ্যোগের কারণেও সাম্প্রতিক সময়ে বৈধ পথে বাড়ছে রেমিট্যান্স। আসন্ন দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা) ঘিরে রেমিট্যান্স প্রবাহ আরও বাড়বে, বলছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে ডলার সংকট কাটাতে রিজার্ভ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) প্রায় ৮৫০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে অতীতে কোনো একটি পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এতো পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। মূলত, জরুরি আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ থেকে এসব ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল। এর পরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই থেমে যায়। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে আসে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, পরের মাস আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।

এরপরই ধীরে ধীরে কমতে থাকে রেমিট্যান্স প্রবাহ। এক পর্যায়ে তা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি নেমে আসে। গত সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আর ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে আসে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।

গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।

শেয়ার করুন