০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:১৬:৩৬ অপরাহ্ন
হিট স্ট্রোকে ৬০০ ইঁদুরের মৃত্যু
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৪-২০২৩
হিট স্ট্রোকে ৬০০ ইঁদুরের মৃত্যু

চিকিৎসা শাস্ত্রে ব্যবহারের জন্য বাণিজ্যিকভাবে চাষ হওয়া অ্যালবিনো প্রজাতির ৬০০ ইঁদুর মারা গেছে। খামারিদের দাবি, তাপদাহের কারণে গত কয়েকদিনে ইঁদুরগুলোর হিট স্ট্রোক হয়ে মারা গেছে। এতে করে খামারিদের ৫০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচাতে অতিরিক্ত ফ্যানের পাশাপাশি ঠান্ডা ও শীতল স্থানে রাখা হচ্ছে ইঁদুরগুলোকে।

খামারিদের দাবির সঙ্গে একমত রাজশাহীর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জুলফিকার মো. আখতার হোসেনও। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে গরমে হিট স্ট্রোকের কারণে ইঁদুরগুলো মারা গেছে।

তবে ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ হেমায়েতুল ইসলাম বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, গরমের কারণে হিট স্ট্রোক করে এতোগুলো ইঁদুর মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত করতে হবে। তার ধারণা, খাবারে টকসিনের কারণে মারা যেতে পারে ইঁদুরগুলো।

জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটখালীর সমসাদিপুরে বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে ইঁদুর চাষ করছেন সালাউদ্দিন মামুন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ল্যাবে চাকরির পাশাপাশি তিনি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন অ্যালবিনো প্রজাতির সাদা ইঁদুরের খামার। এই খামার থেকে মামুনের মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা আয় হয়। তবে তীব্র তাপদাহের কারণে মামুনসহ রাজশাহীর আরও ২০ খামারির ইঁদুর মারা গেছে। গত কয়েক দিনে শুধু মামুনের ৩৫০ ইঁদুর মারা গেছে। এছাড়া মামুনকে দেখে উৎসাহী হওয়া আরও ২০ খামারির ২৫০ ইঁদুর মারা গেছে।

সালাউদ্দিন মামুন বলেন, ‘শুধুমাত্র আমরা যারা খামারি আছি, তারাই ফ্যান দিয়ে ইঁদুর লালন-পালন করি। কোনো কোনো সময় ফ্যানও থাকে না। কিন্তু বিদেশে ল্যাবগুলোতে এসির ব্যবস্থা রয়েছে। একইভাবে দেশের সরকারি ল্যাবগুলোতেও এসি চলে। ফলে সেখানে এই ইঁদুরগুলোর গরম জনিত কারণে সমস্যা হয়। আমাদের রাজশাহীতে তাপমাত্রা বেশি, গরম বেশি। গরমের তুলনায় আমরা তাদের ঠান্ডা জায়গার ব্যবস্থা করতে পারিনি।’

তিনি বলেন, তীব্র তাপদাহের কারণে শুধু আমার নয়, আরও ২০ খামারির ইঁদুর মারা গেছে। তাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে বেশি ৩৫০টি। এছাড়া আরও ২০ জন খামারির কমপক্ষে ২৫০ ইঁদুর মারা গেছে। এতে করে ৫০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, ইঁদুরগুলোর জন্য ঠান্ডা জায়গার ব্যবস্থা করা। একই সাথে অতিরিক্ত ফ্যানের ব্যবহার। অনেক খামারি পানি স্প্রে করছেন। এতে কিছু ইঁদুর বেঁচে গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, ইঁদুর মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। গত কয়েকদিন ধরে রাজশাহীতে তাপপ্রবাহ চলছে। সে কারণে হিট স্ট্রোকের সমস্যা হচ্ছে। আমরা সবসময় বলছি প্রাণীগুলোকে ঠান্ডা স্থানে রাখতে। পাশাপাশি গবাদি পশুদের গোসল করাতে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সের ডেপুটি চিফ ভেটেরিনারিয়ান হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, গরমে ইঁদুর মারা গেছে এটা ময়নাতদন্ত ছাড়া সরাসরি বলা যাচ্ছে না। তবে গরম একটা ফ্যাক্টর হতে পারে। গরমের কারণে হিট স্ট্রোক হতে পারে কিন্তু এতোগুলো ইঁদুর মারা যাওয়ার বিষয়টি বলা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে এতোগুলো ইঁদুর মারা গেলে খাবারে টকসিনের কারণে হতে পারে। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা দরকার।

শেয়ার করুন