স্টাফ রিপোর্টার : ফাঁকা মাঠে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, আমরা আসলেই খুব খুশি হতাম, যদি বিএনপিসহ সব দলই এ নির্বাচনে অংশ নিতো। নানাভাবে তাদের অনুরোধ করার পরও, আবেদন করার পরও তারা নানান শর্তারোপ করে নির্বাচন বর্জন করেছেন। সামনের সংসদ নির্বাচনেও তারা কী করবে বলা যাচ্ছে না। এখন কেউ যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে আমাদের তো কিছু করার নেই। যারা আছে তাদের নিয়েই নির্বাচন করতে হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন উপলক্ষে সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে মহানগরীর নানকিং দরবার হলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ‘মিট দ্য প্রেস’ এর আয়োজন করে। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন এ কথা বলেন।
বিএনপিসহ সব দল সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে ভোট দেওয়ার হার কম হবে এমন প্রশ্নের জবাবে খাইরুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৩০টি ওয়ার্ডের সাধারণ আসেন ১১২ জন প্রার্থী রয়েছেন। সংরক্ষিত নারী আসনে আরও বেশকিছু প্রার্থী রয়েছেন। তাই খুবই স্বাভাবিকভাবে তারাই সব ভোটারকে নিয়ে আসবেন। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী ও সমর্থকরাও ভোটারদের আহ্বান জানিয়ে নিয়ে আসবেন। এছাড়া সাধারণ ভোটারাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে কেন্দ্র যাবেন। সব মিলিয়ে আমি আসা করছি ৬০ শতাংশের ওপরে ভোট কাস্টিং হবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে মহানগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা, ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় ভোটের দিন প্রভাব পড়বে কিনা বা ভোটের দিন ওয়ার্ড পর্যায়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে ভোটার উপস্থিতি কমবে এবং সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা না প্রশ্নে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, এমন আশঙ্কা করা হলেও পরিস্থিতি মোটেও তেমনটা হবে না। রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু থেকেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তারা এরই মধ্যে এ বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তাই ভোটগ্রহণের দিন ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকবে। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়েই রাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর প্রশাসনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করবেন।
এর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী মহানগরবাসীর কল্যাণে কাজ করার জন্য নগরবাসীর কাছে আরেকটিবার সুযোগ চাই।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে রাজশাহীর অবকাঠামো উন্নয়নে যেসব কাজ হয়েছে বর্তমানে তা দৃশ্যমান হয়েছে। এবার আমার লক্ষ্য কর্মসংস্থান। আমার নির্বাচনী ইশতেহারের ১ম বিষয়টি আছে কর্মসংস্থান। নগরবাসী সুযোগ দিলে রাজশাহীতে এবার ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীর উন্নয়নে ২০১৯ সালে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেন। সেই প্রকল্পের মধ্যে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। প্রশস্ত রাস্তা, ড্রেন, আলোকায়ন, স্কুল-কলেজ, কবরস্থান, ঈদগাহ, শ্মশান ঘাট ইত্যাদি অবকাঠামো ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের দাম বাড়ার কারণে সময়ের অভাবে অনেক কাজ করা যায়নি। ওই প্রকল্পের আরও এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। পিছিয়ে পড়া রাজশাহীর মানুষের ভাগ্যের কল্যাণে বাকি কাজ করতে চাই। কর্মসংস্থানের জন্য বন্ধ থাকা সরকারি কারখানাগুলো চালুর চেষ্টা করবো। সেগুলো চালু করতে না পারলে বেসরকারি উদ্যোগে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী বিসিক শিল্প নগরী-২ করে দিয়েছেন। আমি নির্বাচিত হলে শিল্পপতিদের নিয়ে এসে সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হবে। কৃষিপ্রধান এ অঞ্চলের উৎপাদিত আলু, আম, লিচু, টমেটো ইত্যাদি এসব থেকে অনেক পণ্য তৈরি করা যাবে। শিল্পপতিদের নিয়ে আসার জন্য যা দরকার সব কিছুই করতে চাই।
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেগম আখতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, সহ-সভাপতি নাইমুল হুদা রানা, সহ-সভাপতি সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সহ-সভাপতি নওশের আলী, যুগ্ম সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকারসহ আওয়ামী লীগের নেতারা।