২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৪:১১:২৪ অপরাহ্ন
চাঁদের প্রথম ছবি পাঠাল ভারতের ‘চন্দ্রযান–৩’
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৮-২০২৩
চাঁদের প্রথম ছবি পাঠাল ভারতের ‘চন্দ্রযান–৩’

মহাকাশ থেকে ‘চন্দ্রযান–৩’-এর তোলা চাঁদের প্রথম ছবি প্রকাশ করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। ছবিতে দেখা যায়, মহাকাশযান যত কাছে যাচ্ছে, ততই চাঁদের গর্তগুলিকে বড় মনে হচ্ছে। 


গত শনিবার এটি চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে বলে বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। তিনটি অংশ নিয়ে ২৩ আগস্ট ‘চন্দ্রযান–৩’ চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে। সেগুলো হলো– অরবিটার (চাঁদকে প্রদক্ষিণের জন্য), ল্যান্ডার (চাঁদে অবতরণের জন্য) ও রোভার (চাঁদে ভ্রমণের জন্য)। 


এ অভিযান সফল হলে ভারতই প্রথম দেশ হবে, যা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারত চাঁদে অবতরণ করতে যাচ্ছে। ভারতের আগে যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান চাঁদে অবতরণ করেছে। 


মহাকাশযানটি প্রথম দশ দিন পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। গত মঙ্গলবার ট্রান্সলুনার কক্ষপথে প্রবেশ করে। আর রোববার চাঁদের কক্ষপথের দিকে অগ্রসর করে। 


ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলে, তারা চন্দ্রযান–৩ কে সবসময় পর্যবেক্ষণ করছেন। মহাকাশযানটি স্বাভাবিকভাবে চলছে। 


সংস্থাটি আরো বলছে, ইসরো তৃতীয়বারের মত সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে মহাকাশযান পাঠিয়েছে। 


ভারতের বিজ্ঞানীরা জানান, এর আগের চাঁদের অভিযানগুলো থেকে তাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। ফলে চন্দ্রযান–৩ এর সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। 


ভারতে ২০০৮ সালে প্রথম চন্দ্র অভিযানের ১৩ বছর পর এই অভিযান শুরু হয়। আগের অভিযান চাঁদের পৃষ্ঠে পানির অণুর উপস্থিতি আবিষ্কার করে। দিনের বেলায় চাঁদে বায়ুমণ্ডলের উপস্থিতি রয়েছে তাও এই অভিযানের মাধ্যমে জানা যায়। 


২০১৯ সালে মহাকাশ অভিযানে যায় ‘চন্দ্রযান–২’। সেখানেও অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার ছিল। অভিযানটি আংশিক সফল হয়। মহাকাশযানটির অরবিটার এখনো চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে। তবে এটির ল্যান্ড–রোভার চাঁদে অবতরণের আগেই ধ্বংস হয়।


ইসরোর প্রধান শ্রীধারা পানিকার সোমনাথ বলেন, তারা ওই ধ্বংসস্তুপ থেকে ডেটা নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। ‘চন্দ্রযান–৩ এর ত্রুটি ঠিক করতে এই ডেটাগুলো ব্যবহার করছেন। চন্দ্রযান–৩ এর ওজন ৩ হাজার ৯০০ কেজি। এটি তৈরিতে ৬১০ কোটি রুপি খরচ হয়েছে। 


ল্যান্ডারটির (ভিক্রম–ইসরোর প্রতিষ্ঠাতার নামানুসারে) ওজন একহাজার ৫০০ কেজি ও এর ভেতরে ২৬ কেজি ওজনের রোভার রয়েছে। এই রোভারটির নাম দেওয়া হয়েছে প্রাজ্ঞ, যার সংস্কৃত অর্থ বুদ্ধি। 


ইসরো বলছে, কিছু কৌশল অবলম্বন করে চাঁদের মেরুতে মহাকাশযানটির কক্ষপথ ও অবস্থান পরিবর্তন করা হবে। 

এরপর ল্যান্ডারটি থেকে প্রপালশন মডেল আলাদা হয়ে যাবে। ২৩ আগস্ট জটিল কিছু কাজ সারার পর মহাকাশযানটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে। 


অবতরণের পর ছয় চাকার রোভার বের হয়ে আসবে। চাঁদের পাথর ও গর্তগুলির মাঝে পরিভ্রমণ করবে। সেই সাথে চন্দ্রপৃষ্ঠের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ছবি পৃথিবীতে পাঠাবে।


সোমনাথ আরো বলেন, রোভারটিতে ৫টি যন্ত্রাংশ রয়েছে, যা চন্দ্রপৃষ্ঠের গঠনের বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করবে। ভূপৃষ্ঠের উপরে বায়ুমন্ডলে ও ভূপৃষ্ঠের নিচে কী চলছে তা নিয়ে রোভারটি গবেষণা চালাবে। 


চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অনেকাংশ এখনও অনাবিষ্কৃত। দক্ষিণ মেরু ছায়ায় থাকে ও উত্তর মেরুর চেয়ে অনেক বড়। বিজ্ঞানীদের মতে, এই ছায়াযুক্ত অঞ্চলে পানি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। 


চাঁদের নজর দিকে আছে, তেমন দেশ ভারত একা নয়। চাঁদ নিয়ে বিভিন্ন দেশের আগ্রহ বাড়ছে। বিজ্ঞানীদের মতে, চাঁদ নিয়ে অনেক তথ্য এখনো অজানা।


শেয়ার করুন