২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৮:১৬:১৪ পূর্বাহ্ন
চশমা-লেন্সের দামে ও মানে অরাজকতা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৯-২০২৩
চশমা-লেন্সের দামে ও মানে অরাজকতা

দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় ব্যবহৃত চশমা ও লেন্সের ব্যবসায় দেশে অরাজকতা চলছে। চশমা, লেন্স ও সানগ্লাসের মান ও দামে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এ নিয়ে মানুষ প্রায়ই প্রতারণা ও হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ আছে। রিফ্রাক্টোমিটার বা প্রতিসরাঙ্ক মাপার যন্ত্রের সঠিকতাও যাচাই করা হচ্ছে না। এতে মানুষের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চোখের জটিলতাও বাড়ছে।


দৃষ্টিশক্তি পরিমাপ করাতে কিংবা চশমা বদলাতে গিয়ে জটিলতায় পড়ার অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানার আবদুল হাদি লেনের বাসিন্দা ব্যবসায়ী কামাল হোসেন চোখের সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শে চশমা ব্যবহার করছেন। সম্প্রতি তিনি চশমা পরিবর্তন করতে পুরান ঢাকার একটি দোকানে যান। সেই দোকানি চশমায় দুই চোখের জন্য দুই ধরনের মাত্রার লেন্সসংবলিত কাঁচ দেন। কামাল হোসেন জানান, এতে তাঁর চোখে সমস্যা হচ্ছিল। পরে তিনি পাটুয়াটুলীর একজন দক্ষ কারিগরের কাছে গেলে তিনি পরীক্ষা করে সমস্যা দেখেন, দুই চোখের জন্য ভিন্ন মাত্রার লেন্স দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছিল। 


বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী আলমগীর বাদশা জানান, গত বছর এক নম্বর সড়কের একটি দোকানে চোখের চিকিৎসক দেখালে তাঁকে চশমা ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী তিনি চার হাজার টাকায় একটি চশমা নেন। কিন্তু কয়েক দিন সেই চশমা ব্যবহার করায় তাঁর বাম চোখে নতুন সমস্যা দেখা দেয়। এখন তিনি বিদেশে গিয়ে চিকিৎসক দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। 


এ প্রসঙ্গে বিএসটিআইয়ের মেট্রোলজি বিভাগের পরিচালক প্রকৌশলী সাজ্জাদুল বারি আজকের পত্রিকাকে বলেন, আমদানি করা চোখের লেন্স ও রিফ্রাক্টোমিটারের সঠিকতা বিএসটিআই থেকে যাচাই করানো হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে ব্যবহৃত চশমা, সানগ্লাস, লেন্স কিংবা ফ্রেমের কোনো জাতীয় মান এখনো তৈরি হয়নি। এসব সামগ্রী আমদানিতেও কোনো বিধি-নিষেধ নেই। ফলে অবাধে ঢুকে পড়ছে নিম্নমানের সামগ্রী।


এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (মান) তাহের জামিল আজকের পত্রিকাকে বলেন, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী চোখের লেন্সের জাতীয় মান প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। চশমা ব্যবসায় দক্ষতার ঘাটতির কথা স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ চশমাশিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম। তিনি বলেন, চশমা ব্যবসা মূলত পশ্চিমাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এ শিল্পে বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে। তবে এখনো দক্ষতার ঘাটতি আছে। এ ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও চলছে।


চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে চোখের চিকিৎসকেরও সংকট আছে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেটিনা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীপক কুমার নাগ আজকের পত্রিকাকে বলেন, রিফ্রাক্টোমিটারের সঠিকতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। চার-পাঁচ লাখ থেকে শুরু করে দুই কোটি টাকা দামের যন্ত্র রয়েছে। এ ছাড়া অপটিসিয়ানদের (ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী যাঁরা চশমায় লেন্স যুক্ত করেন) এগুলো নিয়ন্ত্রণ করার কথা থাকলেও দেশে অপটিসিয়ানের সংখ্যা খুবই কম। শুধু তাই নয়, দেশে চোখের রোগবিষয়ক চিকিৎসকেরও সংকট আছে।


শেয়ার করুন