ঢাকা-সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের পৃথক দুটি এবং জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজারের নির্দেশে আরেকটিসহ মোট ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রোববার রেলওয়ের উচ্চপদস্থ দুটি তদন্ত কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা অজয় কুমার পোদ্দারকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট, রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ মো. সিরাজ জিন্নাহকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের নির্দেশে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হককে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিগুলোকে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে শনিবার রাতে এবং রোববার সকালে রেলওয়ের দুটি তদন্ত কমিটির সদস্যরা কুলাউড়া স্টেশনে এসে পৌঁছান। সকালে তারা কুলাউড়া স্টেশনে রাখা ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো পরিদর্শন করেন এবং দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
রেলওয়ে সূত্রের দাবি, পাওয়ার কার থেকেই মূলত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় এবং পাওয়ার কারই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া পাওয়ার কারের সামনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ারকোচ ‘চ বগি’ আংশিক এবং পেছনের ‘ঙ বগি’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ট্রেনের চেইন টেনে ট্রেনটি থামিয়ে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে নামতে পারায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
কুলাউড়া রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর উপ-পরিদর্শক জানে আলম জানান, ধারণা করা হচ্ছে এটা দুর্ঘটনা। তবে নাশকতার কোনো সম্ভাবনা ক্ষীণ।
কুলাউড়া স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মো. মুহিবুর রহমান জানান, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলোর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়নি। ক্ষতির পরিমাণটাও তদন্ত কমিটি নির্ধারণ করবে বলে তিনি জানান।
এদিকে রেলওয়ের উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটির প্রধান ও রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান বৈদ্যুতিক কর্মকর্তা অজয় কুমার পোদ্দার জানান, আমরা ঘটনাস্থল ও ক্ষতিগ্রস্ত বগিগুলো পরিদর্শন করেছি। পরিদর্শনকালে বগির ছবি, ভিডিও ফুটেজসহ নানা আলামত সংগ্রহ করেছি। তদন্ত স্বার্থে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তদন্তাধীন বিষয়ে কোনো কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেব।
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন শমশেরনগর ও কুলাউড়া স্টেশনের মধ্যবর্তী চক কবিরাজী নামক এলাকায় এসে পৌঁছলে ট্রেনের পাওয়ার কারে আগুন লেগে পাওয়ার কারসহ ৩টি বগি পুড়ে যায়।