২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৫:২১:৫১ অপরাহ্ন
মাকে ৫০ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১০-২০২৩
মাকে ৫০ লাখ টাকায় আপসের প্রস্তাব

সিলেটে পুলিশের নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা আপস করতে ৫০ লাখ টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রায়হানের মা সালমা বেগম বৃহস্পতিবার আদালত প্রাঙ্গণে এমন অভিযোগ করেন।


তিনি বলেন, শুরু থেকেই মামলা তুলে নিয়ে আপস করার জন্য আসামিরা নানাভাবে আমাদের চাপ ও প্রলোভন দেখাচ্ছে। এমনকি সিসিকের ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান কামরানের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে আপসের প্রস্তাব দিয়েছে আসামিরা। তবে আমরা তাতে রাজি হইনি।


স্থানীয় শওকত নামের একজনের মাধ্যমেও ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে আপসের প্রস্তাব দিয়েছিল আসামিরা। সর্বশেষ জেলগেটে আসামিদের সঙ্গে দেখা হলে রায়হানের চাচাকে ৫০ লাখ টাকার বিনিময়ে আপসের প্রস্তাব দেয় এসআই আকবর। কিন্তু এ সময় আমি বলি-আমার রায়হানকে ফিরিয়ে দাও, আমাদের কোনো টাকা দিতে হবে না।


তবে এমন ‘অভিযোগ’ সত্য নয় বলে দাবি করেন কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান কামরান। তিনি বলেন, ‘রায়হানের মায়ের এমন বক্তব্য সঠিক নয়। শুনেছি শওকত নামের স্থানীয় একজনের মাধ্যমে এ প্রস্তাব দিয়েছিল আসামিরা, আমার মাধ্যমে নয়।’ ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে মহানগরের আখালিয়া এলাকার যুবক রায়হান আহমদকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে তিনি মারা যান।


পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছিল। বর্তমানে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। তিন বছরে ৬৯ জনের মধ্যে ৫৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে।


সিলেট মহানগর দায়রা জজ একিউএম নাসির উদ্দীনের আদালতে বৃহস্পতিবার বিবাদী কনস্টেবল (বরখাস্ত) মো. হারুন অর রশিদ পক্ষের আইনজীবী একজন সাক্ষীকে জেরা করেছেন। আগেই আদালতে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। হারুন অর রশিদের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেরা অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষী একজন পুলিশ কর্মকর্তা।


মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। তারা ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়।


এরপর পুলিশি হেফাজত থেকে কনস্টেবল হারুনসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আকবরকে সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়।


২০২১ সালের ৫ মে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পিবিআই। অভিযোগপত্রে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়।


অন্যরা হলেন-সহকারী উপপরিদর্শক আশেক এলাহী, কনস্টেবল মো. হারুন অর রশিদ, টিটু চন্দ্র দাস, সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. হাসান উদ্দিন ও এসআই আকবরের আত্মীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল নোমান। গত বছরের ১৮ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। মামলায় অভিযুক্ত এক পুলিশ সদস্য উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে রয়েছেন। তবে অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল নোমান এখনো পলাতক। বাকি চার আসামি জেলহাজতে রয়েছেন।


শেয়ার করুন