গত কয়েক মাস এমন আলোচনা বেশ চলছিল যে, ২০২৩ বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ থাকছেন কি থাকছেন না। এমনকি তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেই ‘ফুলস্টপ’ পড়ার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তাকে (মাহমুদউল্লাহ) নিয়েই বিশ্বকাপ খেলতে যায় বাংলাদেশ। সুযোগ পেয়ে করেছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। মাহমুদউল্লাহর এই সেঞ্চুরি বাংলাদেশ অনেক বার্তা পেয়েছ বলে মনে করছেন রমিজ রাজা।
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের দেওয়া ৩৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পা হড়কাতে থাকে বাংলাদেশের। ৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ। ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসেন মাহমুদউল্লাহ।
তিনি (মাহমুদউল্লাহ) আসার পর লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ-এই দুই ব্যাটারের উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৮১ রান। ২০০-২৫০ রানের ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কা যখন চোখ রাঙাচ্ছিল, তখন একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নাসুম আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মোস্তাফিজুর রহমানদের নিয়ে ব্যবধান কমানোর লড়াই করে গেছেন মাহমুদউল্লাহ।
এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। যেখানে ওয়ানডেতে সবকটি সেঞ্চুরিই তিনি করেছেন আইসিসি ইভেন্টে। ৩৭ বছর বয়সী এই ব্যাটারের ১১১ বলে ১১১ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত করতে পেরেছে ২৩৩ রান।
১৪৯ রানে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছে ঠিকই। তবে মাহমুদউল্লাহর ইনিংস থেকে দলের (বাংলাদেশ) অনুপ্রেরণা পাওয়ার মতো অনেক কিছু রয়েছে বলে মনে করেন রমিজ। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সাবেক সভাপতি বলেন, ‘একপ্রান্ত থেকে উইকেট পড়তে থাকলে জেতা কঠিন হয়ে যায়। তবে মাহমুদউল্লাহ জানত যে তার নিজেকে প্রমাণ করতে হবে।
সে জানত এটা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এক ইনিংস। সে ভেবেছিল তাঁর ইনিংসে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলাদেশ পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। সে বাংলাদেশকে অনেক বার্তা দিয়েছে। এখন দেখার ব্যাপার বাংলাদেশ পরের ম্যাচে কেমন করে।’
মাহমুদউল্লাহ উইকেটে আসার আগে যে চার ব্যাটার আউট হয়েছেন, তার মধ্যে একমাত্র তানজিদ হাসান তামিম (১২) দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন। নাজমুল হোসেন শান্ত ০ রানে, সাকিব ১ রানে ও মুশফিকুর রহিম ৮ রান করে আউট হয়েছেন। লিটন দাস ২২ রান করলেও খেলেছেন ৪৪ বল। সেখানে মাহমুদউল্লাহ ধীরে সুস্থে ব্যাটিং করেছেন। স্ট্রাইক রেটটা শেষ পর্যন্ত ১০০ রাখতে পেরেছেন বাংলাদেশের এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ের প্রশংসা করে রমিজ বলেন, ‘এই ইনিংসে সে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমকে একটি বিশেষ বার্তা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটারদের জন্য। সে বুঝিয়ে দিয়েছে যদি আপনার সাহস থাকে, ব্যাকফুটে ভালো খেলেন, সময় নিয়ে খেলেন, তাহলে যে কোনো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ভালো করা সম্ভব।’