০২ মে ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:০৩:৫০ পূর্বাহ্ন
উত্তরাখণ্ডে বিধ্বস্ত টানেলে উদ্ধারকাজ স্থবির, থাইল্যান্ডের সহায়তা চেয়ে নয়াদিল্লি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২৩
উত্তরাখণ্ডে বিধ্বস্ত টানেলে উদ্ধারকাজ স্থবির, থাইল্যান্ডের সহায়তা চেয়ে নয়াদিল্লি

ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন টানেল ধসে ৬ দিন ধরে আটকে আছেন ৪০ শ্রমিক। তবে উদ্ধারকাজে তেমন কোনো অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। বরং ঘটনাস্থলে নতুন করে ফাটল ধরার আওয়াজ পাওয়ার পর উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়ে। এই অবস্থায় এবার থাইল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তা চেয়েছে নয়াদিল্লি। ২০১৮ সালে থাইল্যান্ডের গুহায় আটকে পড়া খেলোয়াড়দের উদ্ধার করেছিল দলটি। 


ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ধ্বংসস্তূপে ড্রিল করার সময় হঠাৎ ভাঙন বা ফাটল ধরার আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে উদ্ধারকাজ। 


ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘দুপুর ২টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ড্রিল করার সময় কর্মকর্তারা ও টানেলের ভেতরে কাজ করা দলটি একটি বড় ধরনের ফাটল ধরার শব্দ শুনতে পান। এই শব্দ শোনার পর থেকেই টানেলে কাজ করা দলগুলোর মধ্যে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়। আবারও পাথর ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে এই অনুমানে ড্রিল করে ভেতরে পাইপ স্থাপনের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।’ 


এদিকে গতকাল শুক্রবার সকালে ওই সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শ্রমিকদের থেকে মাত্র ১৯ মিটার দূরত্বে অবস্থান করছিল উদ্ধারকারী দল। 


গত রোববার রাজ্যের উত্তরকাশি জেলার সিল্কিয়ারা-বারকোট নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গটি ধসে পড়ে। এতে এর ভেতরে ৪০ শ্রমিক আটকা পড়েন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। ৪০ শ্রমিকের অনেকেই ইতিমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ফলে আটকে পড়া সেসব শ্রমিকের স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের জীবিত উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 


দুর্ঘটনার পরপরই শ্রমিকদের উদ্ধারের প্রচেষ্টা শুরু করেন উদ্ধারকারীরা। তবে ধসের পর সুড়ঙ্গের পথ বন্ধ হওয়ায় শ্রমিকদের বের করা যায়নি। বিশেষ ব্যবস্থায় পাইপের মাধ্যমে তাঁদের অক্সিজেন, খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হচ্ছে। চার দিন পর গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লি থেকে একটি উচ্চ ক্ষমতাশীল খননযন্ত্র আনা হয়। 


রয়টার্স জানায়, ওই খননযন্ত্র দিয়ে ইতিমধ্যে সুড়ঙ্গের ভেতর থেকে অনেকটা ধ্বংসস্তূপ সরানো হয়েছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত এক-তৃতীয়াংশ পথ খনন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ সময় উদ্ধারকারী দলের থেকে মাত্র ৪০ মিটার দূরত্বে অবস্থান করছিলেন সেসব শ্রমিক। 


এ বিষয়ে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা দেবেন্দ্র সিং পাটওয়াল রয়টার্সকে বলেন, শ্রমিকদের উদ্ধারে টানেলের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে প্রায় ৬০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। খননযন্ত্রটি প্রায় ২১ মিটার পথ অতিক্রম করেছে। সুড়ঙ্গের ভেতরে থাকা উদ্ধারকারী দলের আরেক কর্মকর্তা বলেন, আটকে পড়া শ্রমিকেরা ভালো আছেন। 


উত্তরাখন্ড জেলার তথ্য কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে নরওয়ে ও থাইল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ দলের সহায়তা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই থাইল্যান্ডের ওই দলের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকে পড়ার প্রায় তিন সপ্তাহ পর ১২ জন কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে জীবিত উদ্ধার করার অভিজ্ঞতা রয়েছে উদ্ধারকারী দলটির।


শেয়ার করুন