আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল, / আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!‘’ কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’র সেই বাণী আরও প্রকট হয়েছে প্রেমিক-প্রেমিকার কাছে, ভালোবাসার কাছে। এই ভালোবাসা কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা মানে না, মানে না ধর্ম-জাতি কিংবা মানুষের বয়স। তেমনই হাজার উদাহরণ রয়েছে ক্রিকেটাঙ্গনে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সেসব গল্পই জেনে নেওয়া যাক, যারা নিজের চেয়েও বয়সে বড় প্রেমিকাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
নিজের থেকে ৬ বছরের বড় হলেও মনে দেওয়া-নেওয়ায় শচীনের কাছে সেটি বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ১৯৯৫ সালে নিজেদের ভালোবাসার স্বীকৃতি দিয়ে দুজনেই বসেন বিয়ের পিঁড়িতে।
অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ ও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছেন প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার এই দলপতি ক্রিকেটের বাইরেও অনেক কিছু জিতেছেন। তার মধ্যে নিজের চেয়ে ২ বছরের বড় বেকি বোস্টনের মন জেতার বিষয়টি হয়তো সবকিছুর আগে উঠে আসবে। ২০১৩ সালে সিডনিতে রাতের বেলায় হাঁটছিলেন কামিন্স। সে সময়ে দেখা হয় বেকির সঙ্গে। কামিন্স তখন নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আসল পরিচয় বেকির খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয়নি। একটি রেস্টুরেন্টে কামিন্সের ছবি দেখে সব বুঝে যান। সেখান থেকে তাদের কাছে আসার গল্প শুরু হয়। ২০২০ সালে আংটি বদলের পরে ২০২২ সালে সারেন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
দুই জগতের বড় তারকা হিসেবে ধরা হয় বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মাকে। একজন ২২ গজের আঙ্গিনায় এবং আরেকজন সিনেমার পর্দায়। তবে দুজনেই ভালোবাসার যোগসূত্রে এক হয়ে গেছেন। কোহলি ৬ মাসের ছোট হয়েও সেটিকে গণ্যই করেননি। ২০১৩ সালে টেলিভিশনের বিজ্ঞাপন ধারণ করার সময় কাছাকাছি হন দুজন। ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা এবং এরপরে পরিণয়। তবে সেসব হয়েছে গোপনীয়তার করিডরে। ২০১৭ সালে তাদের বিয়ের বিষয়টি সামনে আসে।
পেস বোলারদের মধ্যে জাসপ্রিত বুমরাহ প্রতিপক্ষের কাছে এক আতঙ্কের নাম। তবে নিজের ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বেশ রোমান্টিক। ভালোবেসে নিজের চেয়ে ২ বছর ৭ মাসের বড় প্রেমিকাকে ২০২১ সালে বিয়ে করেন তিনি। ২০১৩-১৪ আইপিএলে বুমরাহর একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন সানজানা গণেশন। সেখান থেকেই শুরু হয় ভালোবাসা। এরপরে অর্ধযুগের প্রেম রূপ নেয় বিয়েতে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহকের খাতায় নাম লেখান মোহাম্মদ শামি। ভারতীয় এই পেসারের উত্থান আইপিএলে দিয়ে। আইপিএল শামিকে অনেক কিছুই দিয়েছে। নিজের ক্যারিয়ার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন, সবই যেন এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে আছে।
২০১২ সালে আইপিএল চলাকালীন মাঠে ছিলেন হাসিন জাহান, ছিলেন শামিও। যেখানে চিয়ারলিডার হিসেবে কাজ করছিলেন হাসিন। প্রথম দেখাতেই যেন পরিষ্কার বোল্ড হয়ে যান তিনি। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। এরপরে চিয়ারলিডার হিসেবে কাজ ছেড়ে দেন হাসিন। ২০১৪ সালে বিয়ে হয় তাদের। শত প্রতিকূলতার মধ্যে একটি ছিল হাসিনের বয়স। তিনি শামি থেকে ১০ বছরের বড়। তবে ভালোবাসার সামনে সেটি কেবল নস্যি হয়েই থেকেছে, কখনও বাধা হতে পারেনি।