বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণঅভ্যুত্থানের রূপ নিলে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই পালাতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সেই তালিকায় রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাবশালী পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলও। আওয়ামী লীগ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের এই ঘনিষ্ঠজন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পালিয়েছেন বলে ধারণা করছেন অনেকে।
সোমবার দুপুরের পর শেখ হাসিনার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা তার পৌরশহরের রাধানগরের বাসভবনে হামলা চালায়। এসময় কাজল বাসা থেকে লাফিয়ে পাশের দিঘি দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে যায়। এসময় তাকে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতেও দেখা গেছে। দিঘিতে সাঁতরে তার পালানোর ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিঘি থেকে তীরে উঠে বোরকা পরে সে তার লোকজনের সহায়তায় সীমান্তের ওপারে ত্রিপুরায় পালিয়েছেন বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। তবে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেও তার পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করে বলেন, তার বাস ভবনে হামলার সময় তার বাসার ছাদ থেকে পাথর, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাছাড়াও ককটেল বিস্ফোরণ করাসহ একাধিক গুলির শব্দও শুনতে পায় আন্দোলনকারী জনতা। এতে একাধিক বিক্ষোভকারী আহত হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই বিক্ষুব্ধ লোকজন মেয়রের বাসভবনে প্রবেশ করে ভাঙচুরে ও আসবাবপত্রে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
বুধবার বিকালে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় জরুরি এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক মো. জয়নাল আবেদীন আব্দু, সাধারণ সম্পাদক ডা. খোরশেদ আলম ভুঁইয়া, হেফাজতে ইসলামের কাজী মাঈনুদ্দিন, উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি চন্দন ঘোষসহ সভায় উপস্থিত বিভিন্ন দলের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, সরকারের পদত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়ি, উপাসনালয় ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে আখাউড়া সরকারের সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও উপজেলার কোনো সংখ্যালঘুদের পরিবার বা উপাসনালয়ে কোন হামলার ঘটনা ঘটেনি। তাদের জানমালের নিরাপত্তা দিচ্ছে ছাত্র-জনতা ও হেফাজত ও জামায়াতে ইসলামির নেতাকর্মীরা।