২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৩৭:২২ অপরাহ্ন
তাকসিম এ খান: ৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট, যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৮-২০২৪
তাকসিম এ খান: ৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট, যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!

নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও প্রায় ১৫ বছর ধরে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে ছিলেন বহুল আলোচিত ও সমালোচিত প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। অবশেষে গতকাল বুধবার (১৪ আগস্ট) তার পদত্যাগের খবর দিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। অত্যন্ত সমালোচিত এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি করার অভিযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি থাকার তথ্যকে এর আগে তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা সময় অনিয়ম-দুর্নীতি ও বির্তক লেগেই ছিল। কিন্তু তারপরও তিনি দীর্ঘ দেড় দশক ধরে এমডি পদে বহাল তবিয়তে ছিলেন তিনি। এর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, তাকে অনুরোধ করে এই পদে রেখেছে সরকার।


৫ হাজার কোটি টাকা লোপাট


তাকসিম এ খানের সময়ে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি হয়েছে। এতে রাজধানীবাসীর পানি ও পয়ঃসেবার দাম বেড়েছে। বৈদেশিক সহায়তানির্ভর প্রকল্প বাস্তবায়নে এই সংস্থাটি প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসা কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্যপরিষদের নেতারা।


তাদের মতে, পদ্মা (যশলদিয়া) পানি শোধনাগার প্রকল্পের সঞ্চালন লাইন নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে ৬০০ কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগারের নিুমানের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৬০০ কোটি টাকা, পানি ও পয়ঃবিলের ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকা, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ৬২১ কোটি টাকা।


তারা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিতাড়িত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় বলে তিনি আইনের তোয়াক্কা না করে যা খুশি তাই করেছেন। অন্যায়ভাবে অনেককে চাকরিচ্যুত করেছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা দিলেও অনেককে স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে দেননি। কয়েকদিন ধরে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করছেন। জনরোষে পড়ার ভয়ে নিজ বাসায় না থেকে তিনি এখন হোটেল সোনারগাঁওয়ে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে অনলাইনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিচ্ছেন।


এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা যুগান্তরকে বলেন, অতিষ্ঠ হয়ে ২০২৩ সালের ১৭ মে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রকৌশলী তাকসিমের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে চিঠি লিখেছিলাম। মন্ত্রণালয় তার তদন্ত না করে উপরন্তু চার দিনের মাথায় আমাকে সরিয়ে দেয়। দুর্নীতির টাকার জোরে তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান করেছেন। পাশাপাশি তাকে রাজনৈতিকভাবে সহায়তা করা হয়েছে।


তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসায় প্রকৌশলী তাকসিমের সময়ে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে; তা খুবই পরিষ্কার। পদ্মা (যশলদিয়া), দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে সঠিক তদন্ত করলে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এছাড়া আরও যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সেগুলোও সরকার তদন্ত করতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একবার তদন্ত শুরু করে রহস্যজনক কারণে থেমে যায়। মন্ত্রণালয়কে তিনি নিজ হাতের পুতুলে পরিণত করেছেন।


শেয়ার করুন