বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষা ও নিয়োগ ব্যবস্থায় সংস্কার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কাছে একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় পিএসসির অফিসে বিসিএস নিয়োগে কিছু পরিবর্তন প্রস্তাবনাসংক্রান্ত (বিশেষ করে ৪৭তম বিসিএস) বিষয় নিয়ে ছাত্রশিবিরের একটি প্রতিনিধি দল পিএসসি চেয়ারম্যানের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় এইচআরএম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক সুহাইল, কেন্দ্রীয় ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখা সভাপতি সালাহ উদ্দিন।
ছাত্রশিবিরের স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে-
গত ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আমরা দেখতে পেয়েছি, ফ্যাসিবাদমুক্ত নতুন বাংলাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিসিএস কেন্দ্রীক যে পরিবর্তনের আশা ছিল তা পুরোপুরি পরিলক্ষিত হয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে ৪৭তম বিসিএস নিয়ে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়নি। কবে নাগাদ প্রিলি অনুষ্ঠিত হতে পারে তার তারিখ স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে এমন কোনো বিষয়ও উল্লেখ করা হয়নি। বিসিএসের সিলেবাস আধুনিকরণের বিষয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। প্রতিটি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, রিটেন এবং ভাইভা পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করার কোনো বিধান রাখা হয়নি। লিখিত পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি।
এছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রায় তিন মাসের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। সেশনজটের জন্য একই শিক্ষাবর্ষের (২০১৯-২০) হয়েও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না। অনেক শিক্ষার্থীকেই এ বিষয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
ছাত্রশিবিরের দাবি—
১. ৪৭তম বিসিএস থেকে পরবর্তী সব বিসিএসের জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) নিয়োগ ক্যালেন্ডার করতে হবে।
• জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সার্কুলার
• মার্চের প্রথম সপ্তাহে প্রিলি. পরীক্ষা
• মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রিলি. ফলাফল ঘোষণা
• জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে লিখিত পরীক্ষা
• সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লিখিত ফলাফল
• সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ভাইবা শুরু
• নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ফাইনাল ফলাফল
• জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কর্মক্ষেত্রে যোগদান
২. নন ক্যাডারে নিয়োগ বিসিএসের নিয়োগের ২ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
৩. প্রতি পরীক্ষার্থীর প্রিলি, রিটেন ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা। প্রিলিমিনারি পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রকাশ করা। লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ রাখা।
৪. বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনের ৪৭তম বিসিএসের অংশগ্রহণে ইচ্ছুক সকলেই যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য অবতীর্ণ প্রার্থীর যোগ্যতা অর্জনের সময় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত করা। আবেদনের সময় ৩১ডিসেম্বর পর্যন্তই বহাল থাকতে পারে।
বাংলাদেশের চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে বিসিএস পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়ে সিভিল সার্ভিসে কাজ করা অনেক বড় একটি স্বপ্ন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন এই বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে সংস্কার আনবে।