২৩ জানুয়ারী ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৬:১১:১০ অপরাহ্ন
‘দুই তরুণের প্রেমঘটিত দ্বন্দ্ব’ থেকে রাজশাহীতে সমন্বয়কের ওপর হামলা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০১-২০২৫
‘দুই তরুণের প্রেমঘটিত দ্বন্দ্ব’ থেকে রাজশাহীতে সমন্বয়কের ওপর হামলা

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ককে রড দিয়ে মারধর করার নেপথ্যে রয়েছে দুই তরুণের মধ্যে প্রেমঘটিত দ্বন্দ্ব। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি উঠে এসেছে। এদিকে এই ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন মারধরের শিকার ওই সমন্বয়ক।


গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নগরের কাদিরগঞ্জ ষষ্ঠিতলা কিউট ছাত্রাবাসে নুরুল ইসলামের (শহীদ) ওপর হামলা হয়। হামলায় তিনি বাঁ হাতে আঘাত পেয়েছেন। তাঁর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন আছে। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।


এ বিষয়ে নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ জানান, এটা সম্পূর্ণ বাইরের ঘটনা ছিল। দুই ছেলে এক মেয়েকে পছন্দ করেন। এই প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে হৃদয় ও মোস্তাক মিল্টন নামের দুই তরুণের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ ঘটনায় ষষ্ঠিতলা এলাকায় ওই রাতে মিল্টনকে ধরে আনেন হৃদয়। সেখানে হৃদয়ের দুলাভাইও আসেন। খবর পেয়ে মিল্টনের লোকজন ধাওয়া দিলে হৃদয়ের দুলাভাই ছাত্রাবাসে গিয়ে ওঠেন। মেসে আটকে রাখার খবর পেয়ে হৃদয়ের লোকজন এসে হামলা করেন।


আহত নুরুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায়। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৭ সদস্যের কমিটির একজন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী শহরে তাঁর আত্মীয়ের বাসায় আছেন।


আজ বৃহস্পতিবার সকালে নুরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ‘এখন আগের চেয়ে ভালো আছি। শরীরে ব্যথা রয়েছে। বাঁ হাতে রডের আঘাত লেগেছে। সেখানে ফ্যাকচার না হলেও খুব ব্যথা আছে।’ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মামলা করব। আজকের মধ্যেই এই ঘটনায় মামলা করা হবে।’ হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, মেসে নিজ কক্ষে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় অপরিচিত এক ব্যক্তি ছাত্রাবাসে এসে প্রতিটি কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে কাউকে খুঁজছিলেন। তিনি দ্রুতই জানতে পারেন যে বাইরে থেকে এক ব্যক্তি এসে ছাত্রাবাসে পালিয়েছেন। তখন তিনিও খুঁজতে শুরু করেন। একপর্যায়ে শামীম নামের এক ব্যক্তিকে মেসের চারতলায় খুঁজে পান তিনি। এ সময় শামীমের পক্ষের ২০ থেকে ২৫ জন এসে কোনো কথা না বলেই তাঁর ওপর হামলা করেন। তাঁরা ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীনসহ অন্যদেরও মারতে থাকেন।


ওই ঘটনার পর শিক্ষার্থীসহ কিউট ছাত্রাবাসের মালিক আতঙ্কের মধ্যে আছেন। ছাত্রাবাসের মালিক রোকন উদ্দীন বলেন, ‘একটা প্যানিকের মধ্যে আছি। সবাই তো বাইরে থেকে পড়তে এসেছে। মেসে ঢুকে যেভাবে হামলা করেছে, এটা আন্দাজও করতে পারিনি। এর আগে হামলার সঙ্গে জড়িতদের কখনো আমি দেখিনি। তাদের ছাত্রও মনে হয়নি। শুনেছি, এরা হেতেম খাঁ এলাকার লোকজন। একটা প্রেমঘটিত সমস্যা থেকে এই হামলা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের মেসের কেউ আগে থেকে কিছুই জানত না।’


ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ওই মেসে গিয়েছিল। এখনো কোনো ধরনের অভিযোগ পাননি তাঁরা। এ ব্যাপারে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


শেয়ার করুন