বরেন্দ্র অঞ্চলের জলবায়ু-সংকট হিসেবে খরা তহবিল ও খরা নীতিমালা তৈরীতে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বরেন্দ্র অঞ্চলে নানামূখী সংকট দেখা দিয়েছে। তীব্র তাপদহ, খরা এবং পানি সংকটের কারনে ভবিষ্যতে এই এলাকায় সামজিক সহিংসতাসহ প্রাণবৈচিত্র্য এবং মানুষের জীবন-জীবিকা এবং খাদ্য নিরাপত্তার সংকট ভয়াবহ হবার সম্ভাবনা আছে বলে মনে করছেন বরেন্দ্র অঞ্চলের তরুণ-যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
ৈবিশষ্ঠ জলবায়ু ধর্মঘটের অংশ হিসেবে আজ (১০ এপ্রিল ২০২৫, রৃহস্পতিবার) সকাল ১১ ঘটিকায় রাজশাহী সাহের বাজার জিরো পয়েন্টে উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও বরেন্দ্র অঞ্চলের বৃহৎ তরুণ-যুব ঐক্য ‘বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’ খরা তহবিলের দাবিতে জলবায়ু ধর্মঘট পালন করেন।
ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীগণ বলেন বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা উপকূলীয় এলাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত বরেন্দ্র অঞ্চলটিও দিনে দিনে খরার কারনে অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশর এই খরা এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় জলবায়ুর বৈশি^ক দরবারে তেমন কোন উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো না। অন্যদিকে জাতীয়ভাবে খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য সরকারি বেসরকারিভাবে খরা মোকাবেলায় স্থানীয় মানুষের মতো করে সমন্বিত কোন জাতীয় উদ্যোগ এখনো গ্রহণ করেনি।
বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি শাইখ তাসনিম জামালের সভাপতিত্ব ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিকের সঞ্চালনায় জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচিতে আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ আইন গবেষক ও বারসিক রাজশাহীর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম, জুলাই ৩৬ পরিষদের মাহমুদ জামাল কাদেরী, সামাজিক কল্যাণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সম্রাট রায়হান, আদিবাসী যুব পরিষদ রাজশাহী জেলার সভাপতি উপেন রবিদাস, সেভ দি নেচার এন্ড লাইফ যুব ইউনিটের আহবায়ক জুলফিকার আলী হায়দার সহ প্রমুখ।
জলবায়ু ধর্মঘটের মূল দাবি এবং বরেন্দ্র অঞ্চলের খরা মোকাবেলায় খরা ঘোসণাপত্র তুলে ধরেন বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম এর সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল। তিনি বলেন- খরা, পানি, পানির অধিকার হীনতায় বরেন্দ্র অঞ্চলের সহিংসতা বাড়ছে। খরা যেন হত্যা করছে কৃষক আদিবাসীসহ প্রান্তিক মানুষকে। আদিবাসী কৃষকের আত্মহত্যাসহ সার্বিক যে অন্যায্যতাগুলো বেশি হচ্ছে-তা খরা ও পানির কারণেই বেশি হচ্ছে বলে মনে করি আমরা। তিনি ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
৫ দফা দাবি গুলো হলো-
০১। জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনীদেশগুলোর নিকট থেকে জলবাযুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে খরা তহবিল আদায় ও পদক্ষেপ নিতে হবে।
০২। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের যে ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে সেই ক্ষয়-ক্ষতি সকল ক্ষেত্রে সকল অঞ্চলে নিরূপণ করা।
০৩। জাতীয়ভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলের জনগোষ্ঠী এবং পরিবেশ প্রতিবেশকে বিবেচনায় নিয়ে “খরা নীতিমালা” তৈরীর করতে হবে।
০৪। জাতীয়ভাবে খরা পীড়িতদের জন্য “খরা ভাতা” চালু করতে হবে।
০৫। বৈষম্যমূলক পানি নীতিমালাগুলো (জলমহাল লিজপ্রথা নীতিমালা, বিএমডিএ সেচ নীতিমাল ইত্যাদি) পরিবর্তন করে তা জনবান্ধব করতে হবে।