০৯ অক্টোবর ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৪:২৭:৪০ পূর্বাহ্ন
অল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করেও হারল বাংলাদেশ
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-১০-২০২৫
অল্প পুঁজি নিয়ে লড়াই করেও হারল বাংলাদেশ

ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ পায়নি বাংলাদেশ। ২২১ রানের অল্প পুঁজি নিয়েও লড়াই করলেন বোলাররা। বিশেষ করে দুই স্পিনার তানভীর ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাঝের ওভারগুলোতে রানের লাগাম টেনে ধরেছিল বাংলাদেশ। তবে শেষদিকে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও হাশমতউল্লাহ শাহিদির পাল্টা আক্রমণে জয় পেয়েছে আফগানিস্তান।


আবুধাবিতে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ ওভার ৫ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান করেছেন মিরাজ। জবাবে ৪৭ ওভার এক বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আফগানিস্তান।


নতুন বলেও মোটেও সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশ। অল্প পুঁজি নিয়ে শুরুতেই বেশ খরুচে বোলিং করেছেন তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদরা। তাতে ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু পায় আফগানিস্তান। জমে যাওয়া উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তানভির ইসলাম।

ইনিংসের দশম ওভারের তৃতীয় বলে এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। ব্যাটে-বলে সংযোগ করতে পারেননি, স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি নুরুল হাসান সোহান। ২৩ রান করে ইব্রাহিম ফিরলে ভাঙে ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি।


তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি সেদিকুল্লাহ অটল। তানজিম সাকিবের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন ১৫ বল খেলে ৫ রান করা এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ৫৮ রানে ২ উইকেট তুলে ম্যাচে ফেরার আভাস দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রহমত শাহ ও গুরবাজ মিলে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে অনেকটাই দূরে ঠেলে দেন।

৩১তম ওভারে এই জুটি ভেঙেছেন তানজিম সাকিব। ৫০ রান করা রহমত শর্ট মিডউইকেটে মেহেদি মিরাজের হাতে ধরা পড়েন। পরের ওভারেই আক্রমণে এসে গুরবাজকে ফেরান মিরাজ। ওভারের প্রথম বলেই দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ৫০ রান করা এই ওপেনারকে বোল্ড করেন মিরাজ। তাতে দুই বলের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটারকে ফেরায় বাংলাদেশ।

এরপর পঞ্চম উইকেটে আবারো বড় জুটি গড়ে আফগানরা। ৪৪ বলে ৪০ রান করে আজমতউল্লাহ ফিরলে ভাঙে সেই ৫৯ রানের জুটি। তবে ততক্ষণে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেছে বাংলাদেশ। এরপর আর ফিরতে পারেনি তারা।


এর আগে ব্যাট করতে নেমে নতুন সঙ্গী সাইফ হাসানের সঙ্গে ইনিংস ওপেন করে সুবিধা করতে পারেননি তানজিদ তামিম। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন তামিম। ১০ বল খেলে ১০ রান করেছেন তিনি।

তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে আজমতউল্লাহর বলে রীতিমতো বোকা বনে যান শান্ত। ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দিয়েছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। সাজঘরে ফেরার আগে ৫ বলে ২ রান করেছেন তিনি।

২৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন তাওহিদ হৃদয় ও সাইফ হাসান। অভিষেকে দারুণ শুরু করেছিলেন সাইফ। তবে পাওয়ার প্লে শেষেই ধৈর্য্য হারান তিনি। বড় শট খেলতে গিয়ে সীমানার কাছে ক্যাচ দিয়েছেন। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৭ বলে ২৬ রান করেছেন এই ওপেনার।

টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দারুণ জুটি গড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাওহিদ হৃদয়। দুজনে মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১০১ রান যোগ করেন। তাদের ব্যাটে ভর করে শুরুর ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ায় দল।


উইকেটে এসে সময় নিয়ে থিতু হয়েছেন হৃদয়। রশিদ খান-মোহাম্মদ নবিদের বিপক্ষে আবু ধাবির এই স্লো উইকেটে বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে। তবে উইকেটে থিতু হওয়ার পর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে শট খেলেছেন।  ৭৫ বলে স্পর্শ করেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। এই মাইলফলক ছুঁয়ে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৫৬ রান করে রান আউট হয়েছেন তিনি।

হৃদয়ের সঙ্গে চতুর্থ উইকেট জুটিতে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মিরাজও। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করছেন অধিনায়ক। ৭৪ বলে ব্যক্তিগত ফিফটি পেয়েছেন তিনি। সবমিলিয়ে ৬০ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।

দুই সেট ব্যাটার হৃদয়-মিরাজ ফেরার পর আবারো পথ হারায় বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে টানা ব্যর্থ জাকের ওয়ানডেতে এসেও এই বৃত্ত ভাঙতে পারেননি। ১৬ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন তিনি। জাকেরের পথে হেঁটেছেন আরেক উইকেটকিপার ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান। ১৪ বল খেলে তিনি করেছেন ৭ রান। এই দুজনের দায়িত্বহীন ব্যাটিংয়ে বিপদে পড়ে দল।

শেষদিকে তানজিম সাকিবের ১৭, আর তানভির ইসলামের ১১ রানের সুবাদে ২২১ রান তুলে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন