২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:০৭:৩০ পূর্বাহ্ন
জেলহত্যা দিবস রাষ্ট্রিয়ভাবে পালনের দাবি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৩-১১-২০২২
জেলহত্যা দিবস রাষ্ট্রিয়ভাবে পালনের দাবি

জেলহত্যা দিবস যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রিয়ভাবে পালনের দাবি করেছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পুত্র আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বৃহস্পতিবার পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ার সময় এ দাবি জানান তিনি।


খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘জেলহত্যা দিবস যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রিয়ভাবে পালনের আহবান উঠেছে। আমিও এর সঙ্গে একমত। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দল ও সরকারের প্রতি আহবান জানায়। আমি মনে করি সরকার এ আহবান বিবেচনায় নিয়ে এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিবেন।’


তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের ঢাকায় বসবাসরত সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা। একটিই কারণ সেটি হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে রুখে দেয়া এবং দেশকে আবার পাকিস্তানী ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়া।


‘এরই ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে আমরা দেখি, যখন খুনিচক্র বুঝতে পারে তাদের উদ্দেশ্যে ওই মুহুর্তে বাস্তবায়িত হবে না, দেশ ত্যাগ করার চিন্তাভাবনা তারা করে। সে সময়ে ৩রা নভেম্বর জেলখানায় আবদ্ধ জাতীয় চারনেতাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সমাজের সকল রীতি-নীতি ভঙ্গ করে রাত্রীবেলায় জেলখানায় সশস্ত্র সেনাবাহিনী খুনি রিসালদার মোসলেহ উদ্দিনের নেতৃত্বে পাঠানো হয় এবং তারা সেই জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি ঘটায়।


মেয়র লিটন বলেন, ‘চার জাতীয় নেতা জীবনে ও মরণে বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিলেন। এই বেদনাবিধুর দুটি ঘটনা বাংলাদেশকে হয়তোবা একেবারে শেষ করে দিতে পারতো, যদি না আমাদের মাঝে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের হাল না ধরতেন, ক্ষমতায় না আসতেন, তাহলে দেশ আজকের এই জায়গায় থাকতো না।


মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডগুলির রায় পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি। মানবাধিকারের কথা বলে কানাডা, আমেরিকা ইত্যাদি উন্নত দেশ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের ফেরত দিচ্ছে না, জাতীয় চার নেতার খুনিরাও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পলাতক আছে। তাদেরকেও ফেরত আনা যাচ্ছে না-ইত্যাদি নানা ঘটনায় এই বিচারের পথটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি সহসায় কাটবে বলে আমি আশা করি।’


এদিকে, শোক আর শ্রদ্ধায় জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করছে রাজশাহীবাসী। সকালে নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় জাতীয় চার নেতার অন্যতম এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর আগে নগরের কুমারপাড়া স্বাধীনতা চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।


বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তার পুত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় তার পরিবারের সদস্য, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কামারুজ্জামানের সমাধিত শ্রদ্ধা জানানো হয়।


এর আগে নগরীর কুমারপাড়া মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় সংলগ্ন স্বাধীনতা চত্ত্বরে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান খায়রুজ্জামানসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এর পর সেখান থেকে শোক র‌্যালি বের করা হয়। শোক র‌্যালীটি কামারুজ্জামানের সমাধি স্থলে গিয়ে শেষ হয়। পরে সমাধীতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।


পরে কামারুজ্জামানের সমাধিস্থলে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মাদ আলী কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন, রাজশাহী সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।


স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেগম আক্তার জাহান, রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহিন আকতার রেনী, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা প্রমূখ।

শেয়ার করুন