কিশোরগঞ্জের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. মির্জা কাউসার (২৮) নামে এক চিকিৎসককে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্টি এলাকায় অবস্থিত মেডিক্স কোচিং সেন্টার থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডা. আ ন ম নৌশাদ খান।
গত এক বছর ধরে ডা. মির্জা কাউসার এ কোচিং সেন্টারটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি হাসপাতালের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রভাষক এবং তার বাড়ি জেলার বাজিতপুর উপজেলার উজানচর এলাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউসারের সহকর্মী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী অন্য এক চিকিৎসক জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাস এসে থামে মেডিক্স কোচিং সেন্টারের সামনে। গাড়ির আসনে ছিলেন পাঁচ ব্যক্তি। ওদের দুজনের পায়জামা-পাঞ্জাবি ও টুপির লেবাস ছিল। বাকিদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্রধারী লোক বলে মনে হয়েছে। গাড়ি থেকে নেমে ওদের তিনজন কোচিংয়ের বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় উঠে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
তারা কিছুক্ষণ মির্জা কাউসারের সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে নিচে এনে মাইক্রোবাসের ভেতরে ঢুকিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। এ সময় শোনা যায়, মির্জা কাউসার ভেতর থেকে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে ফোন দিতে বললে একজন তার হাত থেকে ফোনটি কেড়ে নেয়। মাইক্রোবাসের ভেতরে বসে থাকা লোকজনের মধ্যে একজনের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল বলেও দাবি করেন ওই প্রত্যক্ষদর্শী চিকিৎসক।
মির্জা কাউসারের বাবা মির্জা আবদুল হাকিম বলেন, কাউসারের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। কেন তাকে অপহরণ করা হয়েছে এ বিষয়ে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নৌশাদ খান জানান, মির্জা কাউসার খুবই নিরীহ প্রকৃতির মেধাবী চিকিৎসক। তার সুদক্ষ পরিচালনায় মেডিক্স কোচিং সেন্টারটি অল্প দিনেই অনেক এগিয়েছে। কোচিং সেন্টারকেন্দ্রিক কোনো ঘটনায় তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা তার।
কিশোরগঞ্জ সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আল-আমিন হোসাইন যুগান্তরকে মির্জা কাউসার অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সেখান থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ মূল্যায়ন করে পুলিশের একাধিক দল তাকে উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে মির্জা কাউসারকে অবিলম্বে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রোববার দুপুরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন চিকিৎসক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।