২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন
নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর নির্দেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৪-২০২৩
নীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর নির্দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নীল অর্থনীতির অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এই নির্দেশ দেন। এ সময় ২০১৬ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার কমায় প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলানগরে এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে খানা আয় ও ব্যয় জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়। ফলাফল দেখে প্রধানমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) ধন্যবাদ জানান।

খানা আয় ও ব্যয় জরিপের মাধ্যমে মূলত দেশে দারিদ্র্যের হার হিসাব করা হয়। এর আগে ২০১৬ সালে এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। আজ বুধবার সব শেষ হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় পরিবেশ উন্নয়নসহ ১১ প্রকল্প চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৩ হাজার ৬৫৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হবে তিন হাজার ১২৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে আসবে ১০ হাজার ৫২৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।

শামসুল আলম বলেন, সরকার যখন ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করে, তখন মূলত নীল অর্থনীতির বিষয়টি সামনে আসে। তিনি বলেন, ডেল্টা প্ল্যানে নীল অর্থনীতির জন্য একটি পৃথক অধ্যায় রাখা হয়েছে। যেখানে ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়নে তহবিল সংগ্রহে ‘ব্লু বন্ড’ চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অনেক দেশ এর মধ্যে এ ধরনের বন্ড ইস্যু করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরাও যখন নীল অর্থনীতির সম্ভাবানাকে আরো আকর্ষণীয় করতে পারব, তখন এ ধরনের বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে।’ 

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের সুমদ্রসীমার বিষয়ে রায়ের পর বহু বছর পার হলেও সমন্বিত প্রচেষ্টার অভাবে নীল অর্থনীতির অগ্রগতি তেমন হচ্ছে না। নীল অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে নিতে ডেল্টা উইং গঠন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য মো. কাওসার আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নীল অর্থনীতির জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পক্ষে নন। তিনি জানান, কিভাবে নীল অর্থনীতির উদ্যোগগুলো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায় এবং অর্থনীতিতে এর অবদান জিডিপিতে যুক্ত করা যায়, সে সম্পর্কে তাঁরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘অর্থনীতিতে গৃহস্থালি কাজের অবদান স্বীকার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আমাদের অনুশাসন দিয়েছেন। এ বছর তো বাজেটের কার্যক্রম শেষ। আমরা বাংলাদেশ গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানকে (বিআইডিএস) দায়িত্ব দিয়েছি। তারা শিগগিরই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে। আশা করি, আগামী বছরের বাজেটে জিডিপিতে গৃহস্থালি কাজের হিসাব করতে পারব।’

একনেক সভায় প্রবাস আয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন রেমিট্যান্স বেড়েছে রোজা ও ঈদের কারণে। এ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কিছু নেই। তবে ভবিষ্যতে এই ধারা থাকবে না। পরে কোরবানির ঈদের আগে হয়তো আবার বাড়তে পারে।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি প্রকল্প পাস করতে গিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) স্লুইচ গেট নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, হাওরে আর সড়ক হবে না, উড়াল সড়ক হবে। পাশাপাশি কিছু দিন আগে বন্যার পানির চাপে সড়কের যেখানে বেশি ক্ষতি হয়েছে, সেখানে মেরামত না করে কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে বেশি পরামর্শক না নেওয়ার অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অনুমোদন দেওয়া একটি প্রকল্পে একজনের বেশি পরামর্শক না নেওয়ার নির্দেশনা দেন তিনি। পাশাপাশি সমুদ্রের নীল অর্থনীতি কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিশুপল্লীর ছেলে-মেয়েদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারিগরি শিক্ষার আওতায় আনার নির্দেশনাও দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনাসচিব সত্যজিৎ কর্মকার, আইএমইডির সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এমদাদউল্লাহ মিয়ান এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন প্রমুখ।

শেয়ার করুন