২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার, ০৮:৫১:২৪ অপরাহ্ন
রাসিক নির্বাচন: স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন ২০ মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থী
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৫-২০২৩
রাসিক নির্বাচন: স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন ২০ মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থী

রাজশাহী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) আসন্ন নির্বাচনে চার মেয়রসহ মোট প্রার্থী সংখ্যা ১৬৭। তাঁদের মধ্যে ২০ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোন শিক্ষা নেই। তাঁরা সকলেই স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন। তাঁদের মধ্যে একজন মেয়র প্রার্থীও আছেন। অন্য ১৯ জনের মধ্যে ১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডের এবং সাতজন সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন এসব প্রার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ আগেও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। এখন বাড়ি-গাড়ি বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক।

হলফনামায় তাঁরা শিক্ষাগত যোগ্যতার জায়গায় কেউ লিখেছেন, ‘অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন’, কেউ ‘স্বশিক্ষিত’ আবার কেউ লিখেছেন ‘স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন’। এর মানে তারা কেউ স্কুলেই যাননি। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ২০১৮ সালের রাসিক নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হয়েছেন। এবার নির্বাচনে তাঁরা আবারও প্রার্থী হয়েছেন। রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এবার মেয়রপ্রার্থী চারজন। এই চারজনের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন নিজেকে স্বাক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন। এর বাইরে ১৬৩ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১১৭ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

লফনামায় যেসব কাউন্সিলর প্রার্থী ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ অথবা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ লিখেছেন তাঁরা হলেন- ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর আবু বাক্কার কিনু; ১৭ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহু; ২৩ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরী; ২৪ নম্বরের প্রার্থী ও বর্তমান কাউন্সিলর আরমান আলী; ২৬ নম্বরের প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও মখলেসুর রহমান; ২৭ নম্বরের প্রার্থী নুরুল হুদা সরকার, ১৮ নম্বরের মো. ভুট্টু ও মোখলেসুর রহমান মিলন; ৩ নম্বরের রফিকুল ইসলাম ও মো. শামিম, ৫ নম্বরের মাহাতাবুল ইসলাম এবং ৮ নম্বরের হারুন-অর-রশিদ। সংরক্ষিত নারী আসনে ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’, ‘স্বশিক্ষিত’ বা ‘স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ প্রার্থীরা হলেন- সংরক্ষিত আসন ৩ এর প্রার্থী ও এ আসনের বর্তমান কাউন্সিলর মুসলিমা বেগম বেলী, সংরক্ষিত আসন ১ এর প্রার্থী রেখা, ৮ এর পারভীন বেগম ও শিখা রায়; আসন ৬ এর মনজুরা বেগম, ২২, ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী রেহেনা বেগম এবং ১, ২ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের রওশন আরা ইসলাম। ‘অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন’ প্রার্থী আরমান আলী শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন।

২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আরমান আলী বলেন, ‘আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নাই। তবে আমি পড়তে পারি। আমার কোন সমস্যা হয় না। আমি সবকিছু জানি বলেই পারি। জনগণও আমাকে নির্বাচিত করে। এ জন্য এবারও ভোট করছি।’

এদিকে, সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন এবং সংরক্ষিত নারী আসনের ১১ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এসএসসি পাশ করেছেন সাধারণ ওয়ার্ডের ২২ জন ও সংরক্ষিত আসনের ছয়জন নারী। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সাধারণ ওয়ার্ডের ২১ ও সংরক্ষিত আসনের সাতজন প্রার্থী পড়াশোনা করেছেন। এছাড়া সংরক্ষিত নারী আসনের একজন পঞ্চম শ্রেণি, সাধারণ ওয়ার্ডের একজন চতুর্থ শ্রেণি এবং দুজন দশম শ্রেণি পাশ করেছেন।

হলফ নামায় দেখা গেছে, সাধারণ ওয়ার্ডের অন্য ৩৭ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের অন্য ১৪ জন প্রার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা সমমান পাশ করেছেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলা সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন সাবেক কয়েকজন উচ্চশিক্ষিত জনপ্রতিনিধির উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘আগে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতেন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিরা। এখন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই এমন মানুষও জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন। কেউ কেউ পদ ভাঙিয়ে বাড়ি-গাড়ির মালিক হচ্ছেন। এদের সম্পদের উৎসেরও খোঁজ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষিতরা কেন ভোটে আসছেন না, সেটা নিয়ে গবেষকেরা গবেষণা করতে পারেন। তবে একজন সৎ, যোগ্য এবং শিক্ষিত মানুষ জনপ্রতিনিধি হলে সমাজের জন্যই উপকার।’

প্রসঙ্গত, তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২ জুন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হবে। প্রচারণা শেষে ২১ জুন ইভিএমের মাধ্যমে সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। এই নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫১ হাজার ৯৪৫ জন।

শেয়ার করুন