টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিপুল পরিমাণ টাকার ক্ষতি হয়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে পোশাকশিল্পের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। শ্রমিকদের বাসাবাড়িতে পানি ওঠায় তাঁরা কাজে আসতে পারেননি। একই সময়ে বন্দর দিয়ে পণ্য সরবরাহ না হওয়ায় মালিকদের ডেমারেজ (মাশুল) গুনতে হচ্ছে।
তবে বর্ষণ চলাকালে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর মো. ফরিদুল আলম। তিনি বলেন, ‘পণ্য ওঠানামার কাজ ব্যাহত হয়েছে। যেসব পণ্য পচনশীল বা পানিতে ভিজলে নষ্ট হয় (পেরিশেবল আইটেম) সেগুলোর খালাস পুরোপুরি বন্ধ ছিল। এগুলোর মধ্যে ডাল, চাল, চিনি ও ক্লিংকারজাতীয় পণ্য অন্যতম।’
এই কর্মকর্তা আরও জানান, বৃষ্টির দুর্যোগের সময় বন্দরের বহির্নোঙরেও খালাস কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছিল। সেখানে থাকা মাদার ভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে ছোট লাইটার জাহাজে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পণ্য পাঠানো বন্ধ ছিল। সাগর উত্তাল থাকায় লাইটার জাহাজগুলো নিরাপত্তার কারণে বহির্নোঙরে পাঠানো যায়নি। যার ফলে সেখানে খালাসের কাজ ব্যাহত হয়।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল করপোরেশন (বিসিআইসি) সূত্র জানায়, টানা বর্ষণ চলাকালে বিদেশ থেকে আমদানি করা সার পরিবহন বন্ধ ছিল। ছয় দিন সার খালাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম খাদ্য বিভাগের চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক (সিএমএস) জ্ঞানপ্রিয় বির্দূর্শী চাকমা বলেন, কয়েক দিনের বর্ষণে খাদ্যশস্য পরিবহন সূচি ব্যাহত হয়েছে। বন্যায় রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় খাদ্যশস্য পরিবহন করা যায়নি। তবে বন্দরে আপাতত চাল ও গমের কোনো জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় নেই।
বন্দরের কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপকমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সী দাবি করেন, বৃষ্টির ফলে বন্দরে পণ্য খালাস ব্যাহত হলেও এতে রাজস্ব আদায়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ হিসেবে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, বৃষ্টির কারণে এখন বন্দরে পণ্য খালাস ব্যাহত হলেও দুই দিন পরে হলেও আমদানিকারকের পণ্য খালাস হবে। তখন রাজস্ব আদায় হবে।