২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৯:০৬:২০ অপরাহ্ন
জবাবদিহি বাড়াতে মনিটরিং অনুবিভাগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১০-২০২৩
জবাবদিহি বাড়াতে মনিটরিং অনুবিভাগ

সেবা ও জবাবদিহি বাড়াতে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একটি করে মনিটরিং ও মূল্যায়ন অনুবিভাগ (উইং) চালু করা হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ গ্রহণ ও অনুসন্ধান করবে এই অনুবিভাগ। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ে এই অনুবিভাগের দায়িত্বে থাকবেন একজন যুগ্ম সচিব।


এ জন্য সংশোধন হচ্ছে সচিবালয় নির্দেশমালা-২০১৪।


কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করে ই-সেবাসহ সব সেবা সহজ ও অধিকতর ফলপ্রসূভাবে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


 


সচিবালয় নির্দেশমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের সভাকক্ষে এক সভা হবে। সভায় সচিবালয় নির্দেশমালার খসড়া উপস্থাপন করা হবে।


বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।


সচিবালয় নির্দেশমালার খসড়া চূড়ান্ত হলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেলে বর্তমান নির্দেশমালার পরিবর্তে নতুন নির্দেশমালা জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।


 


সচিবালয় নির্দেশমালা হচ্ছে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ের দাপ্তরিক কাজ কিভাবে হবে তার নির্দেশনা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই নিয়মের আলোকেই নাগরিকদের সেবা প্রদান করেন।


বিভিন্ন বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তরসহ সরকারি অফিস পরিচালিত হয় এই নিয়মেই। সরকারের নির্দেশনা সময়োপযোগী করার জন্য সময়ে সময়ে সচিবালয় নির্দেশমালা পরিবর্তন করা হয়। এবার সচিবালয়ের সংগঠন, কর্মবণ্টন ও কর্মপরিকল্পনা, অফিস পদ্ধতি, কার্যনিষ্পত্তি, সভা, সাধারণ, স্থায়ী নিরাপত্তা, নাগরিক সেবা প্রদানসহ প্রতিটি অধ্যায়ে পরিবর্তন আসছে।


 


জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সচিবালয়ের কার্যনিষ্পত্তি আরো গতিশীল করতে মন্ত্রণালয়ের এক অভ্যন্তরীণ সমন্বয় সভায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সচিবালয় নির্দেশমালা হালনাগাদ করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের আলোকে একটি আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটি ও একটি কার্যকর কমিটি গঠন করা হয়।


এ পর্যন্ত আন্ত মন্ত্রণালয় কমিটির ছয়টি সভা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সচিবালয় নির্দেশমালা সংশোধন বিষয়ে অধ্যায়ভিত্তিক মতামত প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, জাতীয় সংসদ সচিবালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ লিখিত মতামত দিয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংস্কার ও গবেষণা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে অনুবিভাগ পর্যায়ে ২৯টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত অনুযায়ী অধ্যায়ভিত্তিক পর্যালোচনাপূর্বক বিদ্যমান নির্দেশনাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, সরকারি সেবা জনগণের কাছে আরো সহজে পৌঁছে দিতে সচিবালয় নির্দেশমালা সংশোধন করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটি হালনাগাদ করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাজে অনেক সুবিধা হবে। তিনি বলেন, ২০১৪ সালের পর প্রশাসনে যেসব নতুন বিষয় এসেছে, সেগুলো সংশোধিত নির্দেশমালায় যুক্ত করা হবে।


যেসব বিষয়ে পরিবর্তন আসছে


দাপ্তরিক নেমপ্লেটে সচিব ও সিনিয়র সচিব লেখা যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে খসড়ায়। কারণ ২০১৪ সালের পর সিনিয়র সচিবের পদ সৃষ্টি হয়েছে এবং ভারপ্রাপ্ত সচিবের পদ বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া একসময় দাপ্তরিক কাজে ফ্যাক্সের ব্যাপক প্রচলন থাকলেও সময়ের পরিবর্তনে এখন তার কার্যকারিতা নেই। তাই নির্দেশমালা থেকে ‘বাংলা বা ইংরেজি ফ্যাক্স’ বাদ দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফরম, অর্থাৎ জুম আইডি, জুম মিটিং, ভার্চুয়াল মিটিং, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারসহ অন্যান্য পদ্ধতি নির্দেশমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। যুক্ত হচ্ছে ই-নথিতে ফাইল নিষ্পত্তি কার্যক্রমের পূর্ণাঙ্গ ধারণা। সচিবালয়ের বাইরেও এ নির্দেশমালা অনুসরণ করা হয় বলে এর নাম সচিবালয় ও সরকারি অফিস কার্য নির্দেশিকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।


১৯৭৬ সালে প্রথম সেক্রেটারিয়েট ইনস্ট্রাকশনস (সচিবালয় নির্দেশমালা) জারি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে সংশোধিত সচিবালয় নির্দেশমালা জারি করা হয়। সর্বশেষ সংস্করণ প্রকাশ করা হয় ২০১৪ সালে।


শেয়ার করুন