দেশে দারিদ্র্য কমলেও বেড়েছে আয়বৈষম্য। করোনা মহামারির মতো ভয়াবহ দুর্যোগ সামলিয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালের হিসাবে সার্বিক দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। এর মধ্যে পল্লী অঞ্চলে ২০ দশমিক ৫ এবং শহরে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে ২০১৬ সালের জরিপে এই হার ছিল ২৪ দশমিক ৩ এবং ২০১০ সালের হিসাবে ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ। এক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে কমছে দারিদ্র্যের হার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘খানার আয়-ব্যয় জরিপ-২০২২’ এর প্রাথমিক ফলাফলে উঠে আসে এসব তথ্য। তবে আগামী ডিসেম্বর মাসে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।
এ প্রেক্ষাপটে আজ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটির মূল কথা হলো বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও মানুষের অসমতা দূর করা। ১৯৯২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে ১৯৯৩ সাল থেকে ১৭ অক্টোবর দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
এদিকে সরকারি গবেষণা সংস্থার তথ্যে বলা হয়েছে, করোনার ধাক্কায় দেশের শহরের দরিদ্র মানুষের মধ্যে ৫১ শতাংশ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন। তারা দারিদ্র্যসীমার উপরে উঠে এলেও করোনা মহামারির সময়ে আবার নিচে নেমে আসেন। তবে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা বলেছিল ওই সময় দারিদ্র্য হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছিল। সেটি পুরোপুরি ঠিক নয়। দারিদ্র্য হার বাড়লেও তা ছিল সাময়িক। সেই সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ৩০ লাখ মানুষকে নতুন করে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) দুদিনব্যাপী বার্ষিক গবেষণা সম্মেলনের প্রথম দিন এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিবিএসের তথ্য বলছে, অতি দারিদ্র্যের হার ২০২২ সালে জাতীয়ভাবে কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশে। এর মধ্যে পল্লী এলাকায় ছয় দশমিক পাঁচ শতাংশ এবং শহর এলাকায় তিন দশমিক আট শতাংশ। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী এটি ছিল ১২ দশমিক নয় শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের হিসাবে আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। যেটি গিনি সহগের মান (বিশ্বব্যাংকের হিসাব পদ্ধতি) শূন্য দশমিক ৪৯৯, যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৮২। ২০১০ সালে এটি ছিল শূন্য দশমিক ৪৫৮। অন্যদিকে বেড়েছে ভোগ বৈষম্যও। ২০২২ সালের হিসাবে ভোগব্যয়ের জন্য গিনি সহগের মান শূন্য ৩৩৪ যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৩২৪। তবে ২০১০ সালে এটি ছিল শূন্য দশমিক ৩২১।