টিএসসির দিকের প্রবেশপথ দিয়ে সামনে এগোলেই বেশ কিছু স্টল নজরে পড়ে। বাহারি সাজসজ্জা নেই। দর্শনার্থীর আনাগোনাও কম। মেলার মূল অংশের পাশের রাস্তা পেরিয়ে যেতে হয় ওখানে। মনে হতে পারে, মেলার বাইরের কিছু। কিন্তু পুরো বইমেলার প্রতিবাদী কণ্ঠ যেন এখানেই।
কিছু তরুণ দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করছিলেন। মেলার এত সাজসজ্জার ভিড়ে লিটলম্যাগ অংশকে দেখলে মনে হবে যেন দারিদ্র্য ঘিরে ধরেছে। অথচ অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের কথা এখানেই সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয়। একজন আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘বইমেলা তো বাণিজ্যিক জায়গায় চলে গেছে। সেলফি তোলো, আড্ডা দাও, তারপরে ফুচকা খাও, চলে যাও। অথচ বড় বড় বইমেলার লিটলম্যাগ চত্বরই প্রাণ। কিন্তু বইমেলায় এ চত্বরই সবচেয়ে অবহেলিত।’
সিনেমার ছোট কাগজ ম্যাজিক লণ্ঠনের সহযোগী সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল বলেন, মূল মেলার চাকচিক্য রেখে এখানে কেউ আসেন না। অবস্থানের কারণেও পাঠক না আসার প্রভাব আছে কি না, ভাবা যেতে পারে।
নান্দিক, প্রান্তস্বর, দশমিক, মুন্সিয়ানা, আড্ডাপত্র, কবিতাভূমি, সাম্প্রতিক, বুনন, চর্যাপদ, ল্যাম্পপোস্টসহ বেশ কিছু স্টল চোখে পড়ে। লিটলম্যাগ চত্বরে প্রতিবাদের প্রমাণও মেলে। একটি ব্যানার টানানো সেখানে। তাতে লেখা, ‘সাহিত্যের সকল পুরস্কার প্রথাকে বর্জন করুন। পাঠক, আপনিও লিটলম্যাগমনস্ক হয়ে উঠুন।’
গতকাল মঙ্গলবার ছিল মেলার ষষ্ঠ দিন। ছুটির দিন না হলেও দর্শনার্থীর কমতি ছিল না। মেলা থেকে বেরোচ্ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। বললেন, ‘এবারের মেলা বেশ ছিমছাম। দর্শনার্থী ও তরুণদের উচ্ছ্বাস দেখে ভালো লাগছে। ভয় ছিল কাগজের দাম বাড়ায় বইয়ের কাটতি কেমন হবে! তবে এত পাঠক দেখে মনে হচ্ছে, বই ভালো বিক্রি হবে।’
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, আইএসবিএন না থাকা, একাধিক বইয়ে একই আইএসবিএন থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের জন্য ৫টি প্রকাশনীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো গাজী প্রকাশন, বঙ্গজ প্রকাশন, কুঁড়েঘর প্রকাশনী, তৃপ্তি প্রকাশ কুঠি ও বাতিঘর প্রকাশনী।