২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:১২:১৮ অপরাহ্ন
পিএইচডি ডিগ্রি চালু হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৬-২০২৪
পিএইচডি ডিগ্রি চালু হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারকরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়াতে পিএইচডির প্রোগ্রাম পরিচালনার সুযোগ চেয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ দাবি আরও জোরালো হয়েছে। বর্তমান ও সাবেক দুই শিক্ষামন্ত্রীও সক্ষমতা অনুযায়ী কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার সুযোগের পক্ষে। এসব বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ উপলক্ষে ছয় সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।


সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টিকে উচ্চশিক্ষার অন্যতম মূল লক্ষ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন পিএইচডি গবেষকরা। যদিও দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি গবেষণার কোনো সুযোগ নেই। সে কারণে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু এখন সময়ের দাবি।


ইউজিসি সূত্র বলছে, বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর কর্মযজ্ঞে এরই মধ্যে নীতিমালা প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি নীতিমালা প্রণয়নের পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রাম পরিচালনার সার্বিক রূপরেখা নির্ধারণ করবে।


 


ছয় সদস্যবিশিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দকে। কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. শরিফুল ইসলামকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য অধ্যাপক হাসিনা খান, উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক গৌর গোবিন্দ গোস্বামী, গ্রিন ইউনিভার্সিটির কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ এবং ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পরিচালক মো. ওমর ফারুখ।


কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করতে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করবে; কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে এবং কমিটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন একাডেমিক ডিসিপ্লিন ও ক্লাস্টারের উপযোগী পিএইচডি কোর্সওয়ার্ক/রিসার্চ মেথডোলজি-সংক্রান্ত কারিকুলাম বা মডিউলগুলো প্রণয়ন করতে পারবে।


 


বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি একটি কাঠামো গঠন করবে। কাঠামো তৈরি হওয়ার পর বেশ কয়েকটি কমিটি করা হবে। এ কমিটিগুলো কোর্স ওয়ার্কসহ যাবতীয় বিষয় চূড়ান্ত করবে। সে আলোকে পরবর্তী সময়ে বিষয়গুলো প্রণয়ন ও চূড়ান্ত করা হবে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করার জন্য মানসম্মত ও যোগ্য শিক্ষক রয়েছে এবং গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে, তাদেরই এ সুযোগ দেওয়া হবে।


এই পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর উদ্যোগটি বহুল প্রতীক্ষিত ও দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা। তারা বলছেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন একটি ধাপে উন্নীত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলো।


জানতে চাইলে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, নীতিমালা হয়ে বাস্তবায়ন পর্যায়ে গেলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে। এটি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যেহেতু সমান নয়, সেক্ষেত্রে দক্ষতা, সক্ষমতা ও পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকা সাপেক্ষে এটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হতে পারে।


শেয়ার করুন