২০১৪ সালে সর্বশেষ নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ফরম্যাটটিতে আরেকটি সিরিজ জিততে তাদের এক দশক অপেক্ষা করতে হয়েছে। মাঝে হোম ও অ্যাওয়ে মিলিয়ে চারটি সিরিজই নিজেদের দখলে নেয় টাইগাররা। এবার আর তরুণ নির্ভর বাংলাদেশ দল সেই দাপট দেখাতে পারেনি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২২৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে তারা ৭ উইকেটের হারে সিরিজও খুইয়েছে।
সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে সিরিজ জয়ের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো স্বাগতিক শাই হোপের দলের। তারা মাত্র ৩৬.৫ ওভারেই বাংলাদেশের লক্ষ্য তাড়ায় সফল হয়েছে। ক্যারিবীয়দের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮২ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার ব্রেন্ডন কিং। আরেক ওপেনার এভিন লুইস ৪৯ ও কেসি কার্টি ৪৫ রান করেন। বিপরীতে বাংলাদেশের পক্ষে একটি করে উইকেট নেন রিশাদ হোসেন, নাহিদ রানা ও আফিফ হোসেন।
সিরিজের তিনটি ওয়ানডেই হচ্ছে সেন্ট কিটসের একই ভেন্যুতে। প্রথম ওয়ানডেতে যেখানে ২৯৪ রান করেছিল বাংলাদেশ, আজ তারা ২৩০–ও পেরোতে পারেনি। অবশ্য অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তানজিম হাসান সাকিব রেকর্ডগড়া জুটি না বাধলে ততদূরও যাওয়া হতো না সফরকারীদের। দ্বিতীয় ইনিংসে লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই সঠিক কক্ষপথে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উদ্বোধনী জুটিতে কিং ও লুইস মিলে ১০৯ রান তোলেন। তবে দুজনই ফিরেছেন ব্যক্তিগত দুটি মাইলফলক অপূর্ণ রেখে। এর মাঝে অবশ্য সৌম্য সরকার ক্যাচ ছেড়ে লুইসের ইনিংস বড় করার সুযোগ করে দেন।
ব্যক্তিগত ২৮ রানে ব্যাট করা অবস্থায় মিরাজের বলে লং অনে ক্যাচ তুলেছিলেন লুইস। কিন্তু সহজ ক্যাচ হাত থেকে ফেলেছেন সৌম্য। ফলে ৭৯ রানে উইকেট নেওয়ার সুযোগও হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। পরে ক্যারিবীয়দের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ২১তম ওভারে। আগের ওভারেই রানার বলে আঘাত পেয়ে বেশ ভুগছিলেন লুইস। তখনই তিনি কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিলেন। ঠিকঠাক দাঁড়াতেও কষ্ট হচ্ছিল তার। খানিক বাদেই টাইগার লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন আক্রমণে আসতে তার হাতেই ক্যাচ দিয়েছেন লুইস। ৬২ বলে তিনি ফিরলেন ৪৯ রান করে।
রানার বলে আউট হওয়ার আগে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেরেন কিং। ৭৬ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮২ রান করে তিনি টাইগার পেসারের দুর্দান্ত এক ইয়র্কার ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন। তখন অবশ্য উইন্ডিজদের জয় পেতে কেবল কিছু সময়েরই অপেক্ষা। কেসি কার্টিও নিজের ফিফটি পাওয়ার পথেই ছিলেন। কিন্তু অনিয়মিত বোলার আফিফের বলে ব্যাক-কভারে থাকা রানার হাতে তালুবন্দী হন কার্টি। এর আগে ৪৭ বলে তিনি ৪৫ রান করেন। পরবর্তীতে হোপ ১৭ ও শেরফান রাদারফোর্ড ২৪ রানে অপরাজিত থেকে বড় জয় নিশ্চিত করে উইন্ডিজদের।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের সামনে খেই হারায় বাংলাদেশ। ১১৫ রান তুলতেই তারা ৭ উইকেট খরচ করে ফেলে। সেখান থেকে রিয়াদ-তানজিমের ৯২ রানের জুটি সফরকারীদের মান বাঁচানো ২২৭ রানের পুঁজি এনে দিয়েছে। রিয়াদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৬২, তানজিদ তামিমের ৪৬ এবং তানজিম সাকিবের ৪৫ রানের ইনিংস ছাড়া বাকি ব্যাটাররা পুরোদমে ব্যর্থ। ফলে ৪৫.৫ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
উইন্ডিজদের হয়ে মাত্র ২২ রানের বিনিময়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন পেসার জেইডেন সিলস। গুদাকেশ মোতি নেন ২ উইকেট।
এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে দুই দল আগামী ১২ ডিসেম্বর একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে।