রাজশাহীতে জেলা মাইক্রোবাস, জিপগাড়ি ও ভাড়ায় চালিত কারচালকদের সংগঠনকে আইনি স্বীকৃতি দিতে এবার আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজশাহীর রাজিব চত্বরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর ও অফিস পরিদর্শন বিষয়ক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা, ন্যায্য দাবি আদায়ে সংগঠনের ভূমিকা জোরদার করা এবং ভাড়া সিন্ডিকেটের মতো অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিরোধে এই উদ্যোগকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সভায় বক্তারা শ্রমিকদের ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন—
১. নির্ধারিত ৮ ঘণ্টার বেশি ডিউটি করলে ওভারটাইম দিতে হবে।
২. ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. হঠাৎ করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যাবে না; বরখাস্তের কমপক্ষে তিন মাস আগে নোটিশ দিতে হবে।
৪. রাজশাহীতে আরও একটি সিএনজি পাম্প চালু করতে হবে।
৫. নির্দিষ্ট কারণ ব্যতীত গাড়ি রিকুইজিশন করা যাবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রমবিষয়ক কর্মকর্তা সালমা খাতুন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজশাহী মহানগর সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক আজিজুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক হাফেজ খাইরুল ইসলাম, ইউনিয়ন সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জিলহজ্জ ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান বলেন, “শ্রমিকদের অধিকার সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে আইন তা সহজভাবে নেবে না। সংগঠিত শ্রমিকরাই তাদের ন্যায্য দাবি আদায় করতে পারে। রেজিস্টারভুক্ত সংগঠন থাকলে শ্রমিকদের কণ্ঠ আরও শক্তিশালী হয়।”
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজশাহী মহানগরের সহ-সাধারণ সম্পাদক হাফেজ খাইরুল ইসলাম বলেন, “রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রো স্ট্যান্ডে কিছু ব্যক্তি বিএনপির জার্সি পরে লাশ সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। মৃত ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে—এটি অনৈতিক ও অমানবিক। আমরা এর বিরুদ্ধে থাকব এবং শ্রমিকদের সচেতন করব।”
তিনি আরও বলেন, মৃত স্বজন পরিবহনের ক্ষেত্রে ভাড়া নির্ধারণ হবে উভয়পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে; কোনো চাঁদাবাজি বা জবরদস্তি সহ্য করা হবে না।
আলোচনা সভায় শ্রমিকদের সংগঠন ও তাদের কল্যাণে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা, অধিকার আদায়ের উপায় এবং ঐক্যের গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, নতুনভাবে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত এই সংগঠনটি শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় ও অনৈতিক কার্যক্রম দমনে একটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

