২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৯:৪৭:৩১ অপরাহ্ন
গোদাগাড়ীতে কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া হবে না
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৯-২০২২
গোদাগাড়ীতে কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীদের ছাড় দেয়া হবে না

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা, যৌতুক, চোরাচালান, সন্ত্রাস ও নাশকতা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলা পরিষদ অডিটারিয়ামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক, ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন মিলি।

সভায় বক্তরা বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরা খুবই শক্তিশালি, মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশ, বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ীরাবীর দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এরা কার সাহসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আপনারা জনগনের উপর দোষ দিয়ে আপনারা দায়িত্ব এড়িয়ে যাবে না। সীমান্ত এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া থাকা শর্তেও হেরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য আসে কি করে। আপনারা আরও মাদকের বিরুদ্ধে আন্তরিক হলে কোন মাদকদ্রব্য দেশে আসবে না। গোদাগাড়ীতে অনেক মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকবদ্র্য প্রতিরোধে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদের একযোগে কাজ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত বক্তারা আরো বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী সামিউল আলমকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের এক লিডারকে সামিউল আলমকে নির্যাতনের মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামীরাও চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী। এদের কে দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

গোদাগাড়ী থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, কোন পুলিশের সাথে মাদক ব্যবসায়ীদের সখ্যতা থাকে প্রমান করতে পারেন তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। থানায় আসতে দালাল লাগবে না। শ্রমিক, ভ্যানচালকসহ যে কেউ আসতে পারেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন মাদক ব্যবসায়ী, শিশু নির্যাতন, কোন আপরাধ করে পার পাবে না।

চর আষাড়িয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল হক বলেন, আমার ইউপি এলাকায় ইদানিং হেরোইন, ইয়াবা,গাঁজা, মাদক ব্যপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

গোদাগাড়ী শিশু নিকোতনের অধ্যক্ষ বরজাহান আলী পিন্টু বলেন, গোদাগাড়ী আফজি পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে কিশোর গ্যাং লিডার, সদস্যরা ছাত্রীদের নিয়ে আড্ডা দেয়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

উপজেলার বসুদেবপুর, মাদারপুর, গোপালপুর, মিষ্টির দোকানের সামনে হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিলের কারবার চলে এছাড়া রাজাবাড়ী, প্রেমতলী হাসপাতাল এলাকা, রেলবাজার মনির হোটেল, কসাইপাড়া, মহিশালবাড়ী গরুরহাট, সুলতানগজ্ঞ, ফিরোজ চত্ত্বর, সুলতানগজ্ঞ, বাসুদেবপুর, পিরিজপুর, কুমুরপুর, মাদারপুর, শিবসাগর প্রভূতি এলাকায় অবাধে হোরোইন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজাসহ বিভিন্নধরের মাদকসেবন, বেচাবিক্রিসহ ছোটবড় অপরাধ হয়। ওই স্থানে অভিযান ও মোবাইল কোর্টসহ মাদকব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেয়া প্রয়োজন।

অন্যান্য বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে আরো বলেন, গোদাগাড়ীর আইনশৃঙ্খলা ভালই আছে, তবে আরও ভাল রাখার জন্য উপজেলার পুলিশ, বিজিপি, সরকারী কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অনেক সচেতন হতে হবে। গোদাগাড়ীর একটাই বদনাম মাদক, হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল,গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসায়ী গডফাদার এখানে রয়েছে। গোদাগাড়ীতে পুলিশের তালিকাভুক্ত ১৭৩ জন মাদকব্যসায়ী রযেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করলে মাদক ব্যবসা কমে আসে।

সভায় আরো বক্তব্য প্রদান করেন, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলমগীর কবীর, মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক ও কলামিষ্ট হায়দার আলী, জেলা পরিষদ সদস্য কৃষ্ণা দেবীসহ জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা,সাংবাদিক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও সুধিজন।

শেয়ার করুন