২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:২৪:২৬ অপরাহ্ন
ইউপি চেয়ারম্যানকে পায়ে পিষে খতম করার হুমকি এমপি ফারুকের
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১২-২০২২
ইউপি চেয়ারম্যানকে পায়ে পিষে খতম করার হুমকি এমপি ফারুকের

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে পায়ে পিষে খতম করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী।

মঙ্গলবার গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদে শত শত মানুষের সামনে ওই চেয়ারম্যানকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিও করেন তিনি। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাকর্মীরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লোকজনও তার এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ভুক্তভোগী সোহেল রানা উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। মাটিকাটার লোকজনের অভিযোগ, গত ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই এমপি ফারুক তার পেছনে লেগেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান জানান, দুপুরে মাতৃত্বকালীন ভাতাবিষয়ক উপজেলা পরিষদের একটি সভায় অংশগ্রহণ শেষে অন্য কয়েকজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে মাটিকাটার চেয়ারম্যান সোহেল রানাও ভবনের নিচে নামছিলেন। ওই সময় উপজেলা পরিষদ ভবনের নিচে কৃষকদের মাঝে সার বীজ বিতরণ সভায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এমপি ফারুক। চেয়ারম্যানরা তাকে সালাম দিতে গেলে তিনি মঞ্চ থেকে নেমে চেয়ারম্যান সোহেল রানাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। ফারুক বলেন, তোকে আমি ফিনিশ করে ছাড়ব। তোর পেটে পা চাপিয়ে খতম করে দেব। তুই খুব বেড়ে গেছিস। তুই তোর কোন কোন বাপের সঙ্গে চলিস আমি সব জানি। তোকে আমি ছাড়ব না। একপর্যায়ে সোহেল রানাকে মারতেও তেড়ে যান তিনি। এ সময় অন্য চেয়ারম্যানরা তাকে রক্ষা করেন।

এদিকে এমপি ফারুকের এমন উদ্যত আচরণে হতবাক হয়ে পড়েন উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তারাও। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানে আলমও এমপি ফারুকের সঙ্গে ছিলেন। তবে তিনি কিছু বলেননি। দলীয় নেতাকর্মীরাও চরম বিবৃতকর অবস্থায় পড়েন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গোদাগাড়ী পৌর মেয়র অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস সোহেল রানাকে এমপির সামনে থেকে সরিয়ে নেন। সার বীজ নিতে আসা কৃষকরাও ফারুকের এমন বৈরী আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের একজন কৃষক বলেন, সোহেল চেয়ারম্যানকে দেখেই খ্যাপে ওঠেন এমপি। তার সঙ্গে চরম বাজে আচরণ করেন এবং তাকে হুমকি দেন।

চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, আমি তার (এমপি ফারুক) কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নই। তার হাত ধরেই রাজনীতিতে এসেছি। কেন তিনি আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন, আমার অপরাধ কী আমি নিজেও বুঝতে পারছি না। জনগণ চেয়েছে বলেই তো আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এমপি ফারুককে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে ফোন ধরার অনুরোধ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

এর আগে ৭ জুলাই নগরীর থিম ওমর প্লাজায় নিজের চেম্বারে এমপি ফারুক রাজাবাড়ী কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছিলেন।

শেয়ার করুন