২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:১৩:৩১ অপরাহ্ন
পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনে আসতে ভয় পায় বিএনপি : লিটন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-০৯-২০২৩
পরাজয়ের ভয়ে নির্বাচনে আসতে ভয় পায় বিএনপি : লিটন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পুনঃনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, নির্বাচন আসলে বিএনপি সহ একটি গোষ্ঠী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। আসলে পরাজয়ের ভয়ে তারা নিবার্চনে আসতে ভয় পায়।


সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৬তম বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাবির সাবাব বাংলাদেশ মাঠে ছাত্রলীগের এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।


সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস। ছাত্রলীগকে নিয়ে অতীতে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্রকে নসাৎ করে ছাত্রলীগ এগিয়ে চলেছে। ছাত্রলীগ হচ্ছে রূপকথার ফিনিক্স পাখির মতো। অতীতের গৌরব বজায় রেখে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে ছাত্রলীগকে কাজ করে যাবে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পড়াখেলা করতে হবে, জানতে হবে।


রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটি ইতোমধ্যে অনেক দেশের ঈর্ষার কারণ হয়েছে। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী নির্বাচনে নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, তাকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।


খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচন আসলে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে মনোনয়ন বাণিজ্য করেন। প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নেয়। একজন মনোনয়ন পায়, বাকিদের টাকাও ফেরত দেয় না। আর সেই টাকা দিয়ে লন্ডনে রাজার হালে থাকে তারেক জিয়া।


নির্বাচন প্রসঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমাদের দেশের নির্বাচন আমরা করবো। কাউকে জিতিয়ে দিয়ে নির্বাচন অংশগ্রহণমুলক ও অর্থবহ হয়েছে বলে প্রমাণ করতে হবে, এটি মামার বাড়ি আবদার ছাড়া আর কিছুই নয়।


সম্মেলনের উদ্বোধক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা জানি আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। যতদিন পর্যন্ত বাংলার মাটি থেকে জামায়াত-শিবির রাজাকার গোষ্ঠীকে চিরতরে নির্মূল না করতে পারি, ততদিন আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ লড়াই চালিয়ে যাবে।


তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মৌলবাদ প্রতিরোধের আপোসহীন দুর্গ। মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার হিম্মত যাদের রয়েছে, তারাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।


ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন আরো বলেন, ক্যাম্পাসে এমনভাবে ছাত্ররাজনীতি করতে হবে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের  আকর্ষণ করবে। আমরা যেন ছাত্ররাজনীতিকে শিক্ষার্থীদের আস্থা, ভরসা ও নির্ভরতার ঠিকানা হিসেবে পরিণত করতে পারি-বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এই শপথ গ্রহণ করতে হবে।


বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করি। যেই নেতৃত্বে আসুক না কেন, আপনারা সবাই সহযোগিতা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে অতীতের ন্যায় আরো সুন্দর ও সুসংগঠিত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটি স্মার্ট ও মডেল ইউনিট হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উপহার দিবেন -এটি আমাদের প্রত্যাশা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।


সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। ঠিক এই সময়ে পাকিস্তানের পেতাত্মারা দেশকে পেছনে অন্ধকারের অতল গহ্বরে নিয়ে যেতে চায়। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিকেরা বেঁচে থাকতে এই বাংলাদেশকে আর পেছনে নিয়ে যেতে দেব না ইনশাল্লাহ।


তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আচরণ এমন যেন না হয়, যে আপনাকে দেখে সাধারণ ছাত্ররা মুখ ফিরিয়ে নিবে। রাজনীতি সুখের বিষয় নয়, উপভোগের বিষয় নয়, রাজনীতি কনসার্ট নয়, একটি ব্যান্ড দল নয়। রাজনীতি বড় কঠিন। অনুগ্রহ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়বেন। আমরা যদি বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জীবন, আদর্শ, কর্ম ও দর্শনকে ধারণ করতে পারি, তাহলে এই বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।


সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য, যুব মহিলা লীগের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ সহ দেশের গৌরবের লড়াই-সংগ্রামের প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রলীগের মাধ্যমে ছাত্রদের সংগঠিত করা হয়েছিল। প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রলীগের গৌরবউজ্জ্বল ভুমিকা ছিল। এই গৌরব ধরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে ছাত্রলীগ অগ্রণী ভুমিকা পালন করবে।


সম্মেলনে  সভাপতিত্ব করেন রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ গোলাম কিবরিয়া। সঞ্চালনা করেন রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।


সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রেজভী আহমেদ ভূঁইয়া সহ ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বিশেষ বক্তা হিসেবে ছিলেন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ হীল বারী, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন রনি, উপ-কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সাব্বির হোসেন, সহ-সম্পাদক আদনান হোসেন, আরো বক্তব্য দেন মহানগর ছাত্রলীগের আওয়ামী লীগের সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম।


এরআগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং ছাত্রলীগের দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন-ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং সম্মেলনের উদ্বোধক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সহ অতিথিরা।


শেয়ার করুন