আইসিসির ওয়ানডে ইভেন্ট মানেই যেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝলক। মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে তখন চলে রানের ফোয়ারা। অথচ ৩৭ বছর বয়সী বাংলাদেশের এই ব্যাটার ২০২৩ বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন কি না, সেটাই ছিল বড় প্রশ্ন।
২০২১ থেকে বাংলাদেশের ধারাবাহিক ব্যাটারদের অন্যতম মাহমুদউল্লাহ। এই সময়ে ৩৭ ওয়ানডেতে ৪৯.৯১ গড় ও ৭৭.২৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১১৪৮ রান। রানে ধারাবাহিক থাকলেও আলোচনার বিষয় ছিল তাঁর স্ট্রাইক রেট। কেননা, এই সময়ে ৩৭ ওয়ানডের ২৪ ম্যাচই তিনি খেলেছেন ৬ নম্বরে। দলের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারছেন না দেখে সমালোচনা চলতে থাকে তাঁকে নিয়ে। যেখানে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন এ বছর চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হওয়ার পর। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ওয়ানডেতে ২৩.৬৭ গড় ও ৬৬.৯৮ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৭১ রান। এর পরই তাঁকে বিশ্রামের মোড়কে বাদ দেওয়া হয়। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে সিরিজ, এশিয়া কাপ—প্রতিটা টুর্নামেন্টেই মাহমুদউল্লাহকে থাকতে হয়েছে দর্শক হিসেবে।
মাহমুদউল্লাহ যখন দর্শক, তখন তাঁরই সতীর্থ মুশফিকুর রহিম ৬ নম্বর জায়গাটা নিজের করে নিয়েছেন। ৬ নম্বরে নেমে ঝোড়ো গতিতে ব্যাটিং করেছেন। করেছেন বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরি। এরই মধ্যে ৬ নম্বরের আগের জায়গাগুলো দখল হয়ে গেছে নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, তাওহীদ হৃদয়ে। ৭ নম্বর ব্যাটিং পজিশন আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে দিয়ে চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ডাক পেয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। সেখানে এক ম্যাচে ৪৯ রান করে বিশ্বকাপের টিকিট অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন। তারপর বিশ্বকাপে ৯৯ গড় ও ১০১.০২ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৯৮ রান, যা বাংলাদেশিদের মধ্যে এবার সর্বোচ্চ, যার মধ্যে গতকাল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছেন ১১১ বলে ১১১ রানের ইনিংস। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্রামের প্রসঙ্গ এলে বাংলাদেশের এই ব্যাটার বলেন, ‘বিশ্রামটা তো মনে হয় বেশি হয়ে গিয়েছিল! এটা তাঁদের সিদ্ধান্ত। দলের জন্য যেটা ভালো মনে করেছেন, তাঁরা সেটা করেছেন। যদি নিজের কাজ সততার সঙ্গে করি, সেটা নিজের ও দলের জন্য যথেষ্ট। এটাই সব সময় চেষ্টা থাকবে।’
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে থেকে টালমাটাল অবস্থায় পড়ে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তামিম ইকবালের বিশ্বকাপ দলে না থাকা, তামিম-সাকিব দ্বন্দ্বের ইস্যুতে বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মাহমুদউল্লাহ এসব ব্যাপারে কিছু বলতে নারাজ। বাংলাদেশের এই মিডল অর্ডার ব্যাটার বলেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করতে চাইছি না। মন্তব্য করার এটা সঠিক সময় নয়। যা হওয়ার হয়েছে, আমরা চেষ্টা করছি বাংলাদেশের জয় এনে দিতে। অনেক চেষ্টা করছি, হচ্ছে না। একটা জিতলেই তখন বলবেন, এটা অন্য বাংলাদেশ দল।’